সারা বাংলা

৮ বছর ধরে বাইরে পড়ে আছে রেডিওথেরাপি মেশিন

খুলনা অঞ্চলের মানুষের ক্যানসার চিকিৎসার লক্ষ‌্যে ২০১২ সালের একটি লিনিয়র এক্সেলেটর বা রেডিওথেরাপি মেশিন খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। মেশিনটি রাখা হয় ক্যানসার বিভাগের ভবনের সামনে।

কিন্তু স্থাপন এবং চিকিৎসা কাযক্রম শুরু করতে না পরায় টানা ৮ বছর ধরে ১৫ কোটি টাকা মূল্যের মেশিনটি বাক্সবন্দি অবস্থায় সেখানেই পড়ে আছে। রেডিও থেরাপি ও অনকোলজি বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মুকিতুল হুদা বিষয়টি জানিয়েছেন।

এদিকে, খুলনায় ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ’ শয্যার ক্যানসার সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা অঞ্চলের মানুষের ক্যানসার চিকিৎসায় উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ‌্যে ২০১২ সালের জুলাই মাসে লিনিয়র এক্সেলেটর বা রেডিওথেরাপি মেশিনটি খুলনা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। মেশিনটি রাখা হয় ক্যান্সার বিভাগের ভবনের সামনে। তখন থেকে আজ অবধি সেখানেই পড়ে আছে মেশিনটি।

সূত্র জানায়, মেশিনটি প্রতিস্থাপন এবং অবকাঠামো নির্মাণে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে সাড়ে ৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়। যার মধ্যে ৫ কোটি টাকা মেশিনের অন্যান্য অংশ ও ২ কোটি টাকা অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের চিঠি চালাচালিতে এখন পর্যন্ত পড়ে আছে ১৫ কোটি টাকার মেশিনটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুমেক হাসপাতালে ক্যানসার ইউনিটে কোন ইনডোর ওয়ার্ড নেই। বর্হিবিভাগে মাত্র দু’জন চিকিৎসক থাকলেও একজন বেশিরভাগ সময় খুলনার বাইরে থাকেন। ক্যানসারের আধুনিক চিকিৎসা ও খরচ কমাতে সরকার ৮টি বিভাগে ৮টি ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে খুলনায় ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণ হবে।

গত ১৮ অক্টোবর সরকার ১ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে, ৮টি বিভাগে, একটি করে ১শ’ শয্যাবিশিষ্ট ক্যানসার সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এটা বাস্তবায়নের জন্য খুলনার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।

রেডিও থেরাপি ও অনকোলজি বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মুকিতুল হুদা জানান, হাসপাতালের এই বিভাগে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সার্জারি, কেমোসহ অন্যান্য চিকিৎসা হলেও নেই কোনো প্রকার রেডিও থেরাপীর ব্যবস্থা। এখানে বেশ কয়েক বছর আগে লিনিয়ার এক্সেলেটর মেশিন আসলেও তা স্থাপন করা হয়নি এখনও। এ মেশিনটির হাই রেডিয়েশন প্রটেকশনের জন্য বাঙ্কার তৈরি করা প্রয়োজন। তাছাড়া এই মেশিন স্থাপন করা সম্ভব না। এ বিষয়ে  সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো ফল হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ডা. মো. মুকিতুল হুদা বলেন,  খুলনায় আলাদা করে ক্যানসার সেন্টার নির্মাণ হবে শুনেছি। ১শ’ শয্যার আলাদা ক্যানসার সেন্টার নির্মাণ করা হলে খুলনাবাসীর ক্যানসার চিকিৎসার সুযোগ বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি।