সারা বাংলা

বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন তাজরিন ফ‌্যাশানের শ্রমিক

সাভারের আশুলিয়ায় নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত শারমিন আক্তার নামে অসুস্থ এক শ্রমিকের মৃত‌্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসার অভাবে অসুস্থতায় ভুগছিলেন বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজন ও শ্রমিক নেতারা। 

বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর টানপাড়া এলাকায় নানার বাড়িতে মারা যান শারমিন আক্তার। 

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় শ্রমিক নেতারা জানান, শারমিন তাজরিন ফ্যাশনের চতুর্থ তলায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। শারমিনের ১৩ ও ৮ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্বামী আব্দুল করিম দিনমজুর। আশুলিয়ার ইয়ারপুর টানপাড়া এলাকায় নানা সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে থাকতেন শারমিন। 

নিহতের পরিবার জানায়, দীর্ঘ আট বছর ধরে চিকিৎসার অভাবে অসুস্থতায় ভুগছিলেন শারমিন আক্তার। আজ সকালে তার মৃত্যু হয়েছে। 

নিহতের সহকর্মী তাজরিনের ফ্যাশনের শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শী নাছিমা আক্তার জানান, শারমিন ও তিনি তাজরিনের চার তলায় একই ফ্লোরে কাজ করতেন। ২৪ নভেম্বর আগুন লাগার পরপর ওই ফ্লোর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন শারমিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই সে অসুস্থ ছিল।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কাস লীগের সাভার-আশুলিয়া শাখার সভাপতি রাকিবুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘তাজরিনের আহত শ্রমিক শারমিন আক্তার আজ সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন। তাজরিন গার্মেন্ট দুর্ঘটনার পর থেকে সে অসুস্থ ছিল। কোন চিকিৎসা পায়নি সে। কোন সাহায্য সহযোগিতাও পায়নি। আমরা খবর পেয়ে তার বাড়িতে এসেছি।’ 

নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘তাজরিনের এই শ্রমিক আট বছর ধরেই অসুস্থ ছিল। গত ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে সে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাজরিনের শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে অনশন করেছে। কয়েক দিন আগে ওই শ্রমিকদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছিল শারমিন। পরে সেখানে অসুস্থ হয়ে গেলে তার সহকর্মীরা তাকে আশুলিয়ায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর এলাকার লোকের কাছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। তবে ভালো চিকিৎসার অভাবে অবশেষে মারা গেলো শারমিন।’

বিপ্লবী গার্মেন্ট-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দু বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য আজ আমরা তাজরিনের আরও এক বোনকে হারালাম। সুচিকিৎসা ও আর্থিক সংকটের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। কেন এই শ্রমিক বিনা চিকিৎসায় মারা গেল? কারখানা মালিক ও বিজিএমইএ’র কাছে এর জবাব চাই। ধিক্কার জানাই এরকম মালিক ও বিজিএমইএ’র প্রতি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’