সারা বাংলা

বাঁশের সাঁকোয় ৩২ বছর

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ১৯৮৮'র ভয়াবহ বন্যার পানির প্রবল তোড়ে ভেসে যায় হাতিভাঙ্গার চকপাড়া সেতু। এরপর পার হয়েছে  ৩২ বছর।  সেতুটি নির্মাণে আর কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। এখন যাতায়াত এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোয়। 

সেতুটির অভাবে যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার দেওয়ানগঞ্জের হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের চকপাড়া, নয়াগ্রাম ও দক্ষিণ ভাতখাওয়া, মন্ডলপাড়া ও সরকারপাড়া পাঁচ গ্রামের হাজারো মানুষ। তবুও এ ব্যাপারে প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধি কেউই এগিয়ে আসেননি।

জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, বন্যায় যেসব ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো পুণঃনির্মাণের তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো অনুমোদন হলে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

গ্রামগুলো দুর্গম এলাকা হওয়ায় চলাচলের বিকল্প ভালো কোনো সড়কও নেই। চকপাড়া-নয়াগ্রাম সড়কের চকপাড়া খালের উপর সেতুটি নির্মিত হয়েছিল আশির দশকে। নির্মাণের কয়েক বছর পরেই সেতুটি বন্যায় ভেসে যায়। 

সেই থেকেই গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করে আসছে। পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই বাঁশের সাঁকো। প্রতি বছর সাঁকোটি সঠিকভাবে মেরামত করতে না পারায় এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই রিকশা-ভ্যানে করে কৃষিপণ্য পরিবহনের পাশপাশি স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরাসহ প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করছে এই সেতুটি দিয়ে।

স্থানীয় নয়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ ছহির উদ্দিন খান জানান, সেতুটা ভেঙে গেছে আজ ৩২ বছর। এখন এই পথে চলাচলে এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই ।

চকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব দুদু মিয়ারও একই অভিযোগ। তিনি জানান, ১৯৮৮ সালের বন্যায় সেতুটা ভেঙে যাওয়ার পর অনেককেই বলা হলেও কেউ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। 

চকপাড়া গ্রামের কৃষক মিস্টার আলী বলেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে ফসল নিয়ে যেতে খুবই সমস্যা হয়। 

মন্ডলপাড়া গ্রামের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরভী আক্তার জানায় শিশুদের স্কুলে আসতে যেতে ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশের সাঁকো পার হতে হচ্ছে।