সারা বাংলা

কুড়িগ্রাম পৌরনির্বাচন: চলছে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের দৌড়ঝাঁপ

আগামী ২৮ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে অনেকটাই সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর এলাকা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে নিজ নিজ প্রার্থীতার কথা জানান দিয়ে আসছে।

এদিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দলীয় প্রার্থীতা নিয়ে চলছে তোড়জোড়। আর এই প্রার্থীতার দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান মেয়র, সাবেক মেয়রসহ ধনাঢ‌্য ব্যবসায়ীরাও।

গত ২৪ নভেম্বর কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী বাছাইয়ে পৌর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় আওয়ামী লীগের ছয় জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেন। পরে দুই প্রার্থী তাদের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। তবে পৌর আওয়ামী লীগের ৭১ কাউন্সিলরের মধ্যে ৬৭ কাউন্সিলরের ভোটে পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজুকে দলীয় মেয়র প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়।

পৌর আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর জন্য ছয় জন আবেদন করেন। এরা হলেন- কুড়িগ্রাম পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুল জলিল, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিউল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মমিনুল ইসলাম মমিন, আওয়ামী লীগ নেতা অলক সরকার ও নবারুন চক্রবর্তী মুন।

সভায় প্রার্থী নির্বাচনে ভোটের সিদ্ধান্ত হলে অলক সরকার ও নবারুন চক্রবর্তী তাদের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। পরে পৌর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের মধ্যে ৬৭ জন সদস্য মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন। এতে পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজু ৩২ ভোট পেয়ে দলীয় মেয়র প্রার্থী নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিউল ইসলাম পান ৩১ ভোট, বর্তমান মেয়র আব্দুল জলিল পান ২ ভোট ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মমিনুল ইসলাম মমিন পান ২ ভোট।

মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি চাষী করিম, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রবি বোস, আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলম ও আফতাব হোসেন চিনু।

তৃণমূলে বেশি ভোট পাওয়া আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান সাজু বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে মাঠ গোছানোর কাজ করছি। এখন কেন্দ্র যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে মেয়র নির্বাচিত হতে পারব বলে আশা করছি।’ কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু জানান, তৃণমূলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের জন্য তিন জনের নাম পাঠানো হবে।

বর্তমানের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়নের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাদের পক্ষে নিজ নিজ কর্মীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীতার জন্য বিএনপি’র তিন জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এরা হলেন- কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহসভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, জেলা বিএনপি’র সহসভাপতি ও সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম বেবু ও সাবেক ছাত্রদল নেতা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মহিউদ্দিন বিপ্লব। 

দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, এই তিন জনের মধ্যে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই কাজ করা হবে।  জেলা বিএনপি’র একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা জেলা বিএনপি’র সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবে।

জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক হাসিবুর রহমান হাসিব জানান, শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) কুড়িগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীতা বাছাইয়ে একটি সভা হবে। সেখানে মেয়র প্রার্থীতার বিষয়ে প্রথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। তবে এখন পর্যন্ত মেয়র প্রার্থীতার জন্য জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।

এদিকে পৌরসভার ভোটারদের সঙ্গে কথা জানা গেছে তারা দলীয় প্রার্থী নয়, নির্বাচনে দাঁড়ানো প্রার্থীদের মধ‌্যে যিনি পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করার যোগ্যতা রাখবেন, এমন প্রার্থীকেই ভোট দেবেন।