প্রথম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য মেয়র-প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারের দ্বারে-দ্বারে। দেশের অন্যান্য পৌরসভার মতো মানিকগঞ্জেও বইছে নির্বাচনের এই হাওয়া। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার টিটিক পেতে আগ্রহী অন্তত ৬ প্রার্থী। তারা নির্বাচনি প্রচরণায় সরব উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। বিপরীতে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের নির্বাচনি প্রচারণায় এখনই দেখা যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন—বর্তমান মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, পৌরসভার সাবেক মেয়র রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন টিপু, সুলতানুল আযম খান আপেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব সাহা, পৌরসভার কাউন্সিলর সুভাষ সরকার।
এদিকে, বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন—দলের জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আতাউর রহমান আতা, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ জাদু ও সাবেক সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা জোবায়দী সিমকী। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গ্যাস সংকট, রাস্তাঘাট রক্ষণাবেক্ষণ ও খাল সংস্কারের সমস্যা দীর্ঘদিনের বলে দাবি ভোটারদের। এসব সমস্যা সমাধান করার মতো প্রার্থীকেই বেছে নিতে চান ভোটাররা।
পৌরসভার বড় সরুন্ডি এলাকার ভোটার মো. ইয়াসিনুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে সব প্রার্থীর দেখা পাওয়া যায়। নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে তারা আমাদের কাছে আসেন। তবে, এবার পৌরবাসীর জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখবেন, এমন প্রার্থীকেই বেছে নেবো।’ সেওতা এলাকার কহিনুর বেগম বলেন, ‘পৌরসভার ভোটার হয়েও ঠিকমতো গ্যাস পাই না। প্রতিবারই সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন প্রার্থীরা। এবার দেখে-শুনে-বুঝে যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেবো।’
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম বলেন, ‘সাধারণ মানুষের পাশে থেকে এত দিন কাজ করেছি। দলের জন্য সব সময় আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে বিশ্বাস করি।’
মনোনয়ন পেতে আশাবাদী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেলও। তিনি বলেন, পৌরবাসীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের বিপদে-আপদে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তাই দল মনোনয়ন দেবে বলে আশা করি।’
এদিকে, বিএনপির টিকিট প্রত্যাশী দলের পৌর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ জাদু। তিনি বলেন, ‘প্রতিবার দল আমার ওপর আস্থা রাখে। এবারও পৌরনির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি। দল মনোনয়ন দিলে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ী হবো।’ মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সাবেক সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা জোবায়দী সিমকী। তিনি বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে অনেকেই দলের মনোনয়ন চেয়েছেন। আশা করি, দল যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেবে।’
নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পৌর নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের সব ধরনের পোস্টার সরিয়ে ফেলতে পৌরসভাকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পোস্টার টানানো যাবে। ’
উল্লেখ্য, বর্তমানে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯টি। এরমধ্যে গত ২২ নভেম্বর ২৫ পৌরসভার নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরমধ্যে মানিকগঞ্জ পৌরসভাও রয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ১ ডিসেম্বর। বাছাই ৩ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর।