সারা বাংলা

খোকসায় সরব আ. লীগ, বিএনপি-জাপায় ‘ধীরে চলো’ 

প্রথম ধাপের পৌরনির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয়েছে পুরোদমে। এই নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভায়ও।  ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর প্রচারণা চলছে। তবে, দুই জনের নাম শোনা গেলেও, এখনো তাদের প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া, জাতীয় পার্টি (জাপা)-এর সম্ভাব‌্য কোনো প্রার্থীকেও দেখা যাচ্ছে না নির্বাচনের মাঠে।  এই দুই দল অনেকটা ‘ধীরে চলো’নীতিতে এগোচ্ছে। 

খোকসা পৌর এলাকার ভোটার ইসমাইল হোসেন ও পলাশ আহম্মেদ জানান, ‘আমরা চাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খোকসা পৌর সভা। সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার শতভাগ নিশ্চিত হলেই আর কিছু চাওয়ার থাকবে না। আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি—কোন দলের প্রার্থী, তা দেখবো না। একজন ভালো ও সৎ মানুষকে পৌরমেয়র হিসেবে দেখতে চাই। যাকে সবসময় মানুষের পাশে পাবো, এমন ব্যক্তিকেই ভোট দেবো।’

খোকসা পৌরনির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার টিকিট-প্রত‌্যাশীদের মধ‌্যে বর্তমান মেয়র তারিকুল ইসলাম তারিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আল মাছুম মুর্শেদ শান্ত, অর্থ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম বাবুলের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বিটুর নামও শোনা যাচ্ছে।

বিএনপির প্রার্থী হিসেবে পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নাফিস আহম্মেদ রাজুর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে, প্রচারণায় নেই তিনি। এছাড়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন আহম্মেদও মনোনয়ন-প্রত‌্যাশীর তালিকায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত পৌর নির্বাচনে তারিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন আল মাছুম মোর্শেদ শান্ত।   খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করাসহ পৌরবাসীর উন্নয়নের জন্য আমরা আল মাছুম মুর্শেদ শান্তকে পৌর মেয়র হিসেবে পেতে চাই। সাধারণ ভোটারদের ৯০ শতাংশ শান্তকে চায়।’

তবে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সদর উদ্দিন খান বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নে বিগত বছরে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে তারিকুল ইসলাম।  আশা করি, এবারও দল তার ওপর দল আস্থা রাখবে। নৌকা প্রতীকে আবারও বিপুল ভোটে জয়ী হবেন তারিকুল ইসলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। তাই খোকসা পৌর এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে নৌকাকে বিজয়ী করার কোনো বিকল্প নেই।’

বিএনপির মনোনয়ন-প্রত্যাশী প্রার্থী নাফিজ আহম্মেদ খান রাজু জানান, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো। তবে, সরকারের কাছে আশা করবো, নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। ’

এদিকে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বাড়ি কুষ্টিয়া। তবে, শুধু কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা পৌরসভা ছাড়া অন্য কোনো পৌর নির্বাচনে এবার জাসদ থেকে প্রার্থী দেওয়া হবে না বলে জানা গেছে।

জেলা জাসদের প্রচার সম্পাদক কারশেদ আলম বলেন, ‘খোকসা পৌর নির্বাচনে জাসদের কোনো মেয়র পদ প্রার্থী থাকবে না। ’ 

একই অবস্থানে জাতীয় পার্টিও। উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আরিফুল ইসলাম নিলা বলেন, ‘খোকসায় দলীয় প্রার্থী দেওয়া হবে কি না, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।  কেন্দ্রের  সিদ্ধান্ত পেলে প্রার্থী দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ নভেম্বর ২৫ পৌরসভার নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  প্রথম ধাপের এই নির্বাচনে কুষ্টিয়ার খোকস পৌরসভাও রয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ১ ডিসেম্বর। বাছাই ৩ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর। 

উল্লেখ‌্য, ২০০১ সালের ২০ মার্চ প্রতিষ্ঠিত খোকসা পৌরসভার আয়তন ১২ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার। এই পৌরসভায় ৮টি ওয়ার্ড রয়েছে। ভোটার সংখ‌্যা ২৩ হাজার ৬৬৪ জন।