সারা বাংলা

পরকীয়ার জেরে শিশু সাথীকে হত্যা করে মা : পুলিশ

হবিগঞ্জের সদর উপজেলায় পরকীয়ার জের ধরে মা ফাহিমা আক্তার প্রেমিকের সঙ্গে মিলে নিজ সন্তানকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। আর মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) রাতে এ সব তথ্য সংবাদিকদের জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম।

২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর সদর উপজেলার চারিনাও গ্রামে তিন সন্তানকে হত্যার জন্য বিষমিশ্রিত জুস খাওয়ান ফাহিমা আক্তার ও তার প্রেমিক আক্তার হোসেন। তাদের মধ্যে শিশু সাথী আক্তার মারা যায়।

ওই বছরের ২৪ নভেম্বর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার প্রধান আসামি ফাহিমা আক্তারকে গত রোববার (২৯ নভেম্বর) তিন দিনের রিমান্ডে আনে পুলিশ। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ফাহিমা আক্তার।  

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ১৫ বছর আগে সদর উপজেলার রাজিউরা ইউনিয়নের চারিনাও গ্রামের সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের মোছা. ফাহিমা আক্তারের বিয়ে হয়। সিরাজুল ইসলাম পেশায় টমটম চালক। তাদের সংসারে ছেলে মো. তোফাজ্জল হোসেনের জন্ম হয়। ভালোই চলছিল তাদের সুখের সংসার। পরে জমজ সন্তান মো. রবিউল ইসলাম সূর্য এবং সাথী আক্তারের জন্ম হয়। এতে তাদের সংসারে খরচ বেড়ে যায়। স্বামী সিরাজুল ইসলামকে সাহায্য করার জন্য ফাহিমা আক্তার স্থানীয় কোম্পানিতে চাকরি নেন।

এর মধ্যে প্রতিবেশী আক্তার হোসেন বিভিন্নভাবে ফাহিমাকে বিরক্ত করতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তাদের মিলনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ফাহিমার স্বামী সিরাজুল ও তাদের তিন সন্তান।

আক্তার হোসেনের প্ররোচনায় সিরাজুলকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য রাজি হন ফাহিমা। পরে ফাহিমা ডিভোর্স দিতে না পারায় তার ওপর ক্ষুব্ধ হন আক্তার হোসেন। ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর মা ফাহিমা ও আক্তার হোসেন মিলে তিন সন্তানকে বিষমিশ্রিত জুস পান করান। সঙ্গে সঙ্গে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু সাথীকে মৃত ঘোষণা করেন। দুই ছেলে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়।