সারা বাংলা

চড়ুই পাখির কলরবে মুখরিত বকুলতলা

দিনাজপুরের হিলির চারমাথা রাস্তার কোণ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটি বকুল ফুলের গাছ। আর গাছে ডালে, পাশে থাকা বিদ‌্যুতের তারে বসে আছে হাজার হাজার চড়ুই পাখি। সন্ধ‌্যায় ব্যস্ততম এই সড়ক তাদের কলরবে মুখরিত হয়ে ওঠে।

পথচারীসহ স্থানীয়রা দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে শোনেন এই চড়ুই পাখিদের গল্প আর ঝগড়া। এসব পাখির খুনসুটি দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায় সবার। সন্ধ্যা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত থাকে এই পাখিগুলো। ভোর হলেই বেড়িয়ে পরে খাবারের উদ্দেশ্যে। আবারও ফিরে আসে বিকেলে।

শুধু পথচারী বা স্থানীয়রা নন, পাখিদের এমন প্রাণবন্ত উচ্ছ্বাস হিলি স্থলবন্দরে আসা মানুষদেরও আকৃষ্ট করে। ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাক ড্রাইভার, হেলপার, পর্যটকরা গাড়ি থেকে নেমে উপভোগ করেন এই পাখিদের কলতান। পাখিদের দল বেঁধে ওড়াওড়ি আর ডাকাডাকি করার দৃশ‌্য উপভোগ করেন সকলে।

কথা হয় ভ্যানচালক আমজাদ হোসেনের সঙ্গে, তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এতোগুলো চড়ুই পাখি একসঙ্গে দেখলেই ভালো লাগে। তাদের ওড়াউড়ি আর কিচিরমিচির শব্দ শুনলে যে কারও মন ভালো হয়ে যাবে। আমি চারমাথায় ভ্যান নিয়ে আসলে বকুলতলার নিচে বসি শুধু এই পাখিগুলো দেখতে আর তাদের কণ্ঠে গান শুনতে।’

বকুল তলার মুদি দোকানি শফিকুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘প্রতি বছর শীত মৌসুমে এই চড়ুই পাখিদের এখানে আগমন ঘটে। কোথা থেকে এতো পাখি আসে তা বলতে পারি না। বকুলের গাছগুলোতে তারা বাসা বাঁধে। বিকেল হলেই তাদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে চারমাথা। আবার সকাল হতে না হতের কোথায় যেনো হারিয়ে যায় তারা।’

এলাকার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মহুয়া তাসনিম বলে, ‘এ পাখিগুলো দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। প্রতিদিন খেলা শেষে সন্ধ‌্যায় আমরা দল ধরে এসে এই পাখিগুলো দেখে যাই। আবার অনেক সময় সকালে এসেও দেখে যাই। এমন পাখি যদি এলাকার প্রতিটি গাছে হয়, তাহলে আমরা আরও আনন্দ পাবো।’

হাকিমপুর উপজেলার চেয়ারম্যান  হারুনউর রশিদ হারন রাইজিংবিডিকে জানান, চড়ুই পাখি জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে। যার কারণে এদের বলা হয় স্প্যারো। যেহেতু এই পাখি জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে, সেজন্য কেউ যাতে এই পাখিদের মারার চেষ্টা না করে,সে বিষয়ে সকলকে সচেতন করা হয়েছে। এছাড়া তাদের রক্ষণাবেক্ষণে আরও কিছু উদ‌্যোগ শিগগিরি নেওয়া হবে।

হাকিমপুর পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত  রাইজিংবিডিকে জানান, প্রতি বছর নভেম্বরের শুরুতে পাখিগুলো ঝাঁক বেঁধে হাজির হয় চারমাথা বকুল তলায়। তাদের এই উপস্থিতি পৌর এলাকাকে আরও সুন্দর করে তোলে। পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রতিদিন তাদের দেখভাল করা হয়। তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৌর কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া আছে।