আমার স্বামী মরছে ৪০ বছর। এহনো কোনো দিন সরকারি কোনো ভাতা পাই না। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাইছি। আর কত বয়স হইলে বয়স্ক ভাতা পামু? আর কত বছর হলে বিধবা ভাতা পামু? কেউ মোগো খবর নেয় না। ২৫ বছর পেরালাইসেসে ডান হাতসহ ডান পাশ বোধ শক্তি পাই না। হাঁটা-চলা করতে অনেক কষ্ট লাগে। লাটি দিয়া হাটি। পোলা দুইটা নদীতে মাছ ধরে। পোলারা আমার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ কইরা সব হারাইছে। বুড়া বয়সে মনে চায় একটু ভালা কিছু খাই কিন্তু টাকার জন্য তাও খেতে পারি না।
এ কষ্টের কথাগুলো বলছিলেন ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাফিয়া খাতুন (৭৮)। তিনি ওই এলাকার মফিজ ব্যাপারী বাড়ির মৃত কাদেরের স্ত্রী।
এ বৃদ্ধা আরও বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে অনেক কষ্ট করে পোলাপাইন বড় করছি। অভাবের সংসারে পোলাপাইন পড়াইতে পারি নাই। মরার আগে যদি একটু শান্তি পাইতাম। সরকার মানুষের ঘর দেয়, বয়স্ক ভাতা দেয়, বিধবা ভাতা দেয়। আর আমরা গরিব মানুষ কিছু পাই না।’
এ বৃদ্ধার ছেলে আলম মাঝি বলেন, ‘এলাকার মেম্বার চেয়াম্যানের পিছনে অনেক ঘুরছি কোনো ভাতা দেয় না আমাগো রে। মা বুড়া বয়সে অনেক কষ্ট পায়। নদীতে মাছ ধরে যেই টিয়া পাই, হেই টিয়া দিয়া মার লইগা ঔষুধ আনি চাউল ডাইল আনি। আর ভালো কিছু মারে খাওইতে পারি না।’
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. বাহাউদ্দিন জানান, ‘ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে ইউনিয়ন কমিটি রয়েছে। তারা যে সকল নাম দেন আমরা ওই নাম নিয়ে কাজ করি। যদি এরকম বয়স্ক লোক হয়ে থাকে ওই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করে তার নামে ভাতা দেয়ার চেষ্টা করবো।’