সারা বাংলা

‘আল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে খুব বালা রাহুক’   

‘জীবনতো অহন শেষই, তবুও আল্লাহ হইতো কয়েকটা দিন কফালে সুখ রাখছিল, তাই একটা বাড়ি পাইতাছি। আল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে খুব বালা রাহুক।’

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন কিশোরগঞ্জের মারজাহান বেগম। তিন মাসের অন্তঃসত্বা অবস্থায় তার স্বামী মারা যান। গত ৩০ বছর ধরে যুদ্ধ করে ছেলেকে বড় করে তুলেছেন। জীবনের শেষ বেলায় তিনি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর। 

শুধু মারজাহান বেগম নয়, তার মতো ৬১৬ পারিবার পেয়েছে একটি করে ঘর ও ২ শতাংশ খাস জমি। 

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে গণভবন থেকে ঠিকানাবিহীন পরিবারকে বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সারা দেশে ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবার ঘর ও জমি পেলো।  

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের শাহপুর গ্রামের মোমেনা খাতুন। ২০ বছর আগে স্বামী মারা যায়। এরপর শুরু হয় তার বেঁচে থাকার লড়াই। স্বামী মারা যাওয়ার পরপরই শিকার হোন নদী ভাঙনের। হারিয়ে যায় বাসস্থানের জায়গাটুকুও। ছোট সন্তানদের লালনপালন করতে বছরের পর বছর ঠিকানাহীন জীবন পার করছেন। পরিবারে রয়েছে ছোট ছোট দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তাদের আহার জোগাতে কখনও অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। এখন ঘর পেয়ে খুব খুশি তিনি।

বাজিতপুরের শোভারামপুরের ঊষা বেগম বলেন, ‘স্বামী মরণের পর থেকে দুই মাইয়া লইয়া মাইনষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছি। পুলাপাইনডিরে লইয়া কত সময় না খাইয়া থাকছি। কেও জিগাও না।’ তাই গরিব-অসহায় মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়ানোর জন‌্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন‌্যবাদ জানিয়ে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

এসব ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা মোমেনা খাতুন, মারজাহান বেগম, ঊষা বেগমসহ আরও অনেকে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০, হোসেনপুর উপজেলায় ২৯, কটিয়াদী উপজেলায় ৫৯, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৫১, করিমগঞ্জ উপজেলায় ৩১, তাড়াইল উপজেলায় ৫০, ইটনা উপজেলায় ১৯৯, মিঠামইন উপজেলায় ৯, অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৩৭, বাজিতপুর উপজেলায় ৪৯, নিকলী উপজেলায় ২৪, কুলিয়ারচর উপজেলায় ২৯ এবং ভৈরব উপজেলায় ৩৯ ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইটনা উপজেলায় দুইটি ব্যারাকে মোট ২৭০টি ঘর গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম রাইজিংবিডিকে জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩ উপজেলায় ৬১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে এসব ঘরে বিদ্যুৎ ও খাবার পানীয়ের জন্য টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে।’