সারা বাংলা

ভালো ফলনেও হতাশ স্কোয়াশ চাষিরা

নতুন সবজি হিসাবে স্কোয়াশের কদর থাকলেও এবছর বেশ লোকসান গুনতে হচ্ছে স্কোয়াশ চাষিদের।  আবহাওয়া ভালো হওয়ায় সবজির উৎপাদনও বেশ ভালো। কিন্তু বেশি উৎপাদনের কারণে বাজার দর কম হওয়ায় চাষিরা খুবই হতাশ। 

তারা বলছেন- এমনিতেই নতুন এই সবজিটির সঙ্গে গ্রামের মানুষের তেমন পরিচয় নেই, আবার বেশি উৎপাদন হওয়ায় বাজারেও ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছেনা।  

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় স্কোয়াশ চাষ করে প্রথমবারেই হতাশ তরুণ কৃষক হাসানুল হক।  লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি এবছর দেড় বিঘা জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছেন। 

হাসানুল হক জানান, ইন্টারনেটে স্কোয়াশের চাষবাদ দেখে তিনি চাষ শুরু করেছিলেন।  দেড় বিঘা জমিতে তার আড়াই হাজারের মতো স্কোয়াশ গাছ রয়েছে।  ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।  প্রতিটি গাছেই ৪-৫টা করে স্কোয়াশ ধরেছে।

তিনি বলেন, স্কোয়াশ খুবই দ্রুত সময়ের ফসল। বীজ রোপণের ৫৫ দিনেই ফল পেয়েছি। জমি বর্গা, সেচ, জমি প্রস্তুতি, লেবার সবকিছু মিলিয়ে মোট ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ভালো দাম হলে প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো। তবে এবার যে দাম, লাভ তো দূরের কথা খরচও উঠবে না।  এত ফলন হলে কি হবে, দাম নাই।

তিনি বলেন, একমাত্র বাজারে স্কোয়াশের দাম না থাকার কারণে চাষিদের লোকসান হচ্ছে।  তাছাড়া এবার স্কোয়াশ খুবই ভালো হয়েছে। রোগবালাই কম, আবহাওয়াও বেশ ভালো ছিলো।  দাম ভালো হলে স্কোয়াশ চাষ খুবই লাভজনক হতো।

কৃষক তৈয়ব আলী জানান, স্কোয়াশ খুব ভালো হয়েছে।  প্রতিটি গাছে ফুল ও ফল বেশ ভালো। আমাদের এলাকায় এটা একেবারেই নতুন। বাজারে এবার সব ধরনের সবজির দাম কম হওয়ার কারণে স্কোয়াশেরও দাম কম।  তাই লোকসান হচ্ছে। 

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন বলেন, স্কোয়াশ একটি বিদেশি সবজি। তবে আমাদের অঞ্চলের আবহাওয়া স্কোয়াশ চাষের উপযোগী। আমরা এই নতুন সবজি চাষ সম্প্রসারণের চেষ্টা করছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মিরপুর উপজেলার কয়েকজন কৃষক ৩-৪ একর জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে স্কোয়াশের চাষ করেছেন।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, স্কোয়াশ সবজি হিসাবে সুস্বাদু এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ। গতবছর মিরপুর উপজেলার কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে স্কোয়াশ চাষ করেছিলেন।  তারা বেশ ভালো সাফল্য পেয়েছিলেন। এবছরও বেশ কিছু কৃষক ও তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা স্কোয়াশ চাষ করেছেন। তাদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এবছর আবহাওয়া সবজি চাষের অনুকূল হওয়ায় সব ধরনের সবজির উৎপাদনই বেড়েছে।