সারা বাংলা

প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরে হামলা: ৫০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাবেক সংসদ সদস‌্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির এ সাজা প্রদান করেন। 

এর আগে সকালে এ মামলায় জেল হাজতে থাকা সাবেক সাংসদ হাবিবসহ ৩৪ জন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের সামনেই এ রায় ঘোষণা করা হয়। বাকী ১৬ আসামি পলাতক রয়েছেন। 

এদের মধ্যে তিন জনের ১০ বছর, সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ তিন জনের ৯ বছর ও বাকী আসামিদের সর্বনিম্ন ৪ বছরে থেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরার পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ। 

অপরদিকে আসামীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাডভোকেট তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।

কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, সাবেক পৌর মেয়র আক্তারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, আব্দুর রকিব মোল্ল্যা, আব্দুল মজিদ, হাসান আলী, ময়না, আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল; 

অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ ও টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন। 

পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু , নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক, মাহাফুজুর রহমানসহ ১৬ জন।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে হাসপাতালে দেখে মাগুরা ফিরছিলেন। পথে কলারোয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা শিকার হন। 

এতে শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তার সফরসঙ্গী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, শহিদুল হক জীবন, আবদুল মতিনসহ অনেকেই আহত হন। সেসময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন। 

এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। 

পরবর্তীতে মামলাটি খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। 

গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে কাঠগোড়ায় থাকা সাবেক সাংসদ হাবিবসহ ৩৪ জনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকি ১৬ আসামি পলাতক রয়েছেন।