মাদারীপুরের কালকিনি পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, নির্বাচনের মাঠ থেকে পুলিশ তাকে তাদের গাড়িতে করে তুলে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে নিয়ে যায়। যদিও জেলা পুলিশ বলছে, তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঢাকায় গিয়েছিলেন।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালকিনি পৌরসভার দক্ষিণ কৃষ্ণনগরে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মশিউর রহমান সবুজ এ দাবি করেন।
এই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বলেন, শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে কালকিনি পৌর এলাকার ঝাউতলায় নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান তাকে ফোন দেন। এরপরই সেখানে কালকিনি থানার ওসি নাছিরউদ্দিন গাড়ি নিয়ে হাজির হন। পরে সেখান থেকে তাকে পুলিশের গাড়িতে করে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। আর পুলিশ সুপার গাড়িতে করে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন থেকে সবুজের মো্বাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, সবুজকে অপহরণ করা হয়েছে- দাবি করে বিকেলে বিক্ষোভ নিয়ে কালকিনি থানা ঘেরাও করে তার স্বজন ও সমর্থকরা। তারা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেয়। কালকিনি-ভুরঘাটা ও কালকিনি-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভ মিছিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা চড়াও হয়। তখন দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। বেশকিছু দোকান ভাঙচুর করা হয়। আড়াইঘণ্টা ধরে চলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে অর্ধশত মানুষ আহত হয়।
এদিকে ১৩ ঘণ্টা পর শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৩টার দিকে বাড়ি ফিরে আসেন সবুজ। অপহরণ বা নিখোঁজের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ বলেন, তাকে ঢাকায় নিয়ে আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরর সঙ্গে দেখা করতে বাধ্য করা হয়েছে। ওবায়দুল কাদের তাকে কালকিনি পৌরসভার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন বলেও জানান উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান সবুজ। তবে এই প্রার্থী বলেন, তবুও জনগণের ইচ্ছায় তিনি নির্বাচনে থাকছেন
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, মেয়র প্রার্থী সবুজ নিজ বাড়িতে আছেন। তার কোনো ক্ষতি হয়নি। পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গেছে- এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সবুজ ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় গিয়েছিলেন এবং রাতেই ফিরে এসেছেন।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে।