সারা বাংলা

শহীদ মিনারের সামনে ইংরেজিতে নামফলক: স্থানীয়দের ক্ষোভ

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ইংরেজি বর্ণে নাম ফলক তৈরি করেছে উপজেলা প্রশাসন। নামফলকটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পাশাপাশি এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভাষা সৈনিকসহ এলাকাবাসী।

ভাষা সৈনিক আবদুল কাদের ভাসানী বলেন, ‘যে ভাষার জন্য লড়াই করেছি, সেই স্মৃতি রক্ষার জন্য স্থাপনা। তার পাশে ইংরেজি মানায় না। এটাকে তুলে ফেলা উচিত।’

সাইনবোর্ড বা অন্য কোনো ইনিস্টিটিউটে ইংরেজির ব্যবহার নিয়ে যখন তীব্র সমালোচনা হচ্ছে, তখন এরকম বেমানান নামফলক দিয়ে শহীদদের অমর্যাদা করা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রায়হান শরীফ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই শেক্সপিয়ার পড়ব। তবে জীবনানন্দকে ভুলে নয়। বাংলা রেখে, বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দিয়ে তারপর ইংরেজিকে আনলে হয়তো শোভনীয় হতো।’

আদিতমারী সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের প্রভাষক আবু আওসাদ মো. মোনতাজিম বলেন, ‘বাংলা একমাত্র ভাষা, যার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে। এ ভাষা যে শ্রেষ্ঠ, তার বড় প্রমাণ হলো ভাষার জন‌্য প্রাণ বিসর্জন।’

কবি ও ছড়াকার মজিদ মাহমুদ বলেন, ‘কেন এমনটা হচ্ছে? অজ্ঞতাবশত নাকি ইচ্ছেকৃত- সেটি দেখা দরকার। বাংলায় আগে লিখে প্রয়োজনে ইংরেজিতে লেখা যেতে পারে। তবে শহীদ মিনারের সামনে ইংরেজি ভাষা চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে রাষ্ট্রীয় অর্থে এমন পরিকল্পনাহীন কাজে বির্তকের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে খোদ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও। 

জেলা কালচারাল অফিসার মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘সম্প্রতি আমি আদিতমারী যাইনি। ফলে সেখানে ঠিক কী ঘটেছে তা বলতে পারছি না। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।’

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনসুর উদ্দিন বলেন, ‘যৌথ পরিকল্পনায় তৈরি করা হয়েছে নাম ফলকটি। বিষয়টিতে দোষের কিছু নেই। বাংলা-ইংরেজিতে খুব একটা ডিফারেন্স নেই। বেমানান হবে কেন? এটি তৈরির সময় আমরা সবাই মিলে ডিসিশন নিয়েছি।’

এদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে লালমনিরহাটের জেলা প্রসাশক আবু জাফরকে কয়েকবার মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।