সারা বাংলা

চট্টগ্রামে মডেল বানানোর ফাঁদ

চট্টগ্রাম মহানগরীতে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র তরুণীদের মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছে। ফটোশুট বা মডেলিংয়ের জন‌্য ডেকে নিয়ে কখনো অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে, কখনোবা সম্ভ্রমহানি করছে।

এ ধরনের একটি প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ডবলমুরিং থানা। প্রতারকরা র‌্যাম্প মডেলিংয়ের কথা বলে দুই তরুণীকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এনে লুটে নিয়েছে তাদের সবকিছু। পরে গভীর রাতে ওই দুই তরুণীকে রাস্তায় ফেলে তারা পালিয়ে যায়। পুলিশ প্রতারকদের গ্রেপ্তার করেছে এবং তরুণীদের মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা উদ্ধার করেছে।

ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন এসব তথ‌্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত ও প্রতারণা

লাভলী আক্তার লিপি ঢাকায় মডেলিং করেন। ২০১৮ সালে তার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় আনোয়ার ইসলাম সানির (২৭)। লিপিকে চট্টগ্রামে বিজ্ঞাপনের ফটোশুটে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানায় সানি। এ কাজে দুজন মেয়ে লাগবে বলে জানানো হয় লিপিকে। বিজ্ঞাপনের কাজে ভালো অংকের টাকা পাওয়া যাবে বলেও জানানো হয় তাকে। লিপি তার এক বান্ধবীকে নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসেন। তারা আনোয়ার ইসলাম সানির সঙ্গে নগরীর আখতারুজ্জামান সেন্টারের সামনে দেখা করেন। পরে সানি ও তার দুই সহযোগী ওই দুই তরুণীকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগসহ সবকিছু নিয়ে পালিয়ে পালিয়ে যায়।

থানায় অভিযোগ এবং পুলিশের অভিযান

ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন রাইজিংবিডিকে জানান, দুই তরুণীর কাছ থেকে অভিযোগ পেলে সেটি গুরুত্বের সঙ্গে নেয় পুলিশ। গত রোববার ডবলমুরিং মডেল থানার একটি দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। পুলিশ প্রথমে সানিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। সানির দেওয়া তথ‌্যের ভিত্তিতে তার বাসা থেকে তরুণীর ভ্যনিটি ব্যাগ ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে সানিকে সঙ্গে নিয়ে ডবলমুরিং থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তার সহযোগী আরাফাত (২৬) এবং আহমেদ উল্লাহকে (২৩) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বিক্রয় ডটকমের মাধ্যমে বিক্রি করা মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রতারকদের পূর্ণ পরিচয়

১। আনোয়ার ইসলাম সানি (২৭), বাবা: নুরুল ইসলাম, মা: ফরিদা বেগম, সাং: ৩ নং ফকিরহাট, মধ্যম গোসাইলডাঙ্গা, এমপি সাহেবের বাড়ি সংলগ্ন ফজল হক ড্রাইভারের বাড়ি, থানা: বন্দর, জেলা: চট্টগ্রাম।

২। মো. আরাফাত (২৬), বাবা: মো. জসিম, মা: ফরিদা ইয়াছমিন, সাং: ৩ নং ফকিরহাট, মধ্যম গোসাইলডাঙ্গা, আক্তার সাহেবের বাড়ির পাশে, হানিফ সওদাগরের বাড়ি, থানা: বন্দর, জেলা: চট্টগ্রাম।

৩। আহমেদ উল্লাহ (২৩), পিতা: মো. আলমগীর, মা: রোকেয়া বেগম, সাং: ৩ নং ফকিরহাট, মধ্যম গোসাইলডাঙ্গা, আক্তার সাহেবের বাড়ির পাশে, হানিফ সওদাগরের বাড়ি, থানা: বন্দর, জেলা: চট্টগ্রাম। 

৪। রবিউল হোসেন হৃদয় (২২), বাবা: আনোয়ার মিয়া, মা: আয়শা আক্তার, সাং: কেবি মোকবুল হোসেন লেইন, কামাল সওদাগরের বাড়ি, থানা: চকবাজার, জেলা: চট্টগ্রাম।

পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন‌্য ব‌্যক্তিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।