সারা বাংলা

কন্যাশিশু জন্ম নেওয়ায়...

মেয়েশিশু জন্ম দেওয়ায় রোকসানা খাতুন (২৩) নামে এক গৃহবধূকে শ্বশুর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোমামারা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এরপর স্বামীর বাড়ির উঠান থেকে নবজাতক ও গৃহবধূকে উদ্ধার করে পুলিশ।

শুক্রবার (১২ মার্চ) সকালে এসব তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি মাসুদ রানা জানান,  গত এক বছর আগে ঘোড়ামারা গ্রামের মহব্বর আলীর ছেলে রাজা মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের ধনিয়ারকুড়া গ্রামের লুৎফর মিয়ার মেয়ে রোকসানা খাতুনের। বিয়ের পর ভালই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু গত আড়াই মাস আগে স্বামী রাজা মিয়া ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে বুঝতে পারেন রোকসানা মেয়ে সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন। এরপর তার ওপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন। কখনও অপরাধ করলেও মারপিট; আবার কখনও যৌতুক চেয়ে নির্যাতন চলে মেয়েটির ওপর।

গত ৮ মার্চ স্বামীর বাড়িতে প্রসব ব‌্যাথা উঠলে রোকসানাকে দ্রুত নেওয়া হয় রংপুরের সালেহীন ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেদিন হাসপাতালে রোকসানা এক ফুটফুটে মেয়েশিশুর জন্ম দেন। এরপর সেখানে চারদিন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ছাড়পত্র নিয়ে দুপুরে স্বামীর বাড়ি ঘোড়ামারায় ফেরেন তিনি।

ফিরে দেখেন বাড়ির মূল ফটকে ঝুলছে তালা। ভিতর থেকেও কারো সাড়া পাননি তিনি। চারদিনের নবজাতকসহ সারাদিন বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন ওই গৃহবধূ। পরে বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রোকসানার শ্বশুর ও শাশুড়ি তাকে সাফ জানিয়ে দেন; গত তিনমাস আগে তালাক দেওয়া হয়েছে তাকে।

এটা শুনে উপায় খুঁজে না পেয়ে রোকসানা সন্ধ্যার দিকে ফোন করেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ। ততক্ষণে কোলের নবজাতকটি অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রোকসানা ও তার নবজাতকে উদ্ধার করে। পরে তার শ্বশুর বাড়ির মূল গেটে তালা ও বাড়িতে কাউকে না পেয়ে পুলিশ তাকে সুন্দরগঞ্জের বাবার বাড়িতে পাঠায়।

ওসি মাসুদ রানা জানান, পুলিশ পাঠিয়ে নবজাতকসহ রোকসানাকে উদ্ধার করে তার বাবার বাড়িতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।