সারা বাংলা

ত্বকী হত্যা: ভ্রমরের জামিন আবেদন ফের নামঞ্জুর

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামি শওকত সুলতান ভ্রমরের জামিন আবেদন ফের নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আদালতে ভ্রমরের আইনজীবী তার জামিন আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুরের আদেশ দেন। আগামী ২০ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানীর তারিখ ধার্য হয়েছে।

জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সুলতান শওকত ভ্রমর চলতি বছরের ১০ মার্চ সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে। সেসময় জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সুলতান শওকত ভ্রমর নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস‌্য শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের এক বছরের মাথায় তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাবের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান ২০১৪ সালের ৫ মার্চ সংবাদ সম্মেলনে আজমেরী ওসমানসহ ১১ জন মিলে ত্বকী হত্যায় অংশ নেয় বলে গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেন।

ত্বকী হত্যা মামলার আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ বাবু বলেন, ‘আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়া আসামি সুলতান শওকত ভ্রমর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০১৪ সালে বিদেশে পালিয়ে যায়। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারীপরোয়ানা জারী করে। দীর্ঘ দিন পর আজ সে আদালতে জামিনের জন্য আত্মসমর্পণ করে।’

ত্বকী হত্যা মামলার বাদী ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘সুলতান শওকত ভ্রমর স্বঘোষিত হত্যাকারী হওয়ার পরও অভিযোগপত্র না দেওয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ওসমান পরিবারের সহযোগিতায় বিদেশে পালাতে পেরেছিল। আট বছরেও অভিযোগপত্র দাখিল হয়নি। আমরা দ্রুত তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাবের উদঘাটিত তথ্য অনুযায়ী প্রধান আসামি আজমেরী ওসমানসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী শাখা খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘ আট বছরেও আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়নি। 

এর পর থেকে ত্বকী হত্যার বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।