সারা বাংলা

ধামইরহাটে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডি’র চাল বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁর ধামইরহাটে মো. ফজলুর রহমান নামে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডি’র চাল বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৩১ মার্চ) ফরিদা পারভীন বাদী হয়ে এই অভিযোগ করেন। তিনি ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলবিল গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। 

অভিযুক্ত মো. ফজলুর রহমান উপজেলার ৩ নম্বর আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

অভিযোগ পত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগেই ফরিদার স্বামী মারা গেছেন। বর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করেছেন। চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের পরামর্শে তিনি ভিজিডির চাল সংগ্রহের জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। তারপর কয়েকবার যাচাই-বাছাই শেষে চুড়ান্ত তালিকাতে ফরিদা পারভীনের নাম অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু তিন মাস আগে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিন্টু ফরিদাকে জানান যে, তার নাম তালিকাতে নাই।

কিন্তু সম্প্রতি ফরিদা জানতে পারেন যে, চাল বিতরণের সময় বিতরণকারী তার নাম ধরে ডাকাডাকি করেছেন। বিষয়টি জানতে চেয়ারম্যানের নিকট গেলে তিনি ফরিদা পারভীনকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে ফরিদা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে গিয়ে জানতে পারেন যে, তার নাম ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কলামে ২ নম্বর তালিকাতে লিপিবদ্ধ আছে।

মোসা. ফরিদা পারভীন বলেন, ‘চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান আমাকে শাসিয়ে বলেন, আমাকে এক মাসের চাল দিবেন এবং পরের মাসে আমার নামের চাল অন্যকে দিবেন। অন্যথায় আমার নাম তালিকা থেকে বাদ দেবেন বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। স্বামীকে হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ অবস্থায় আমার নামে আসা ভিজিডির চাল অমাকে না দিয়ে অন্য কাওকে দিলে খাবো কি?’

৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবু মুসা অক্ষেপ করে বলেন, ‘অভিযোগকারী ফরিদা আমার কাছে এসেছিলেন। তার অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে যাই। সেখানে ফরিদার নামসহ জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বরের সংঙ্গে মিল রয়েছে। স্বামী হারানো এক বিধবা নারীর চাল চেয়ারম্যান কিভাবে আত্মসাৎ করে তা আমার বোধগম্য নয়।’

৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিন্টু জানান,  ‘চেয়ারম্যান আমাকে যা বলেছেন, আমি তাই করেছি। তালিকায় তার নাম দেখেছি কিন্তু তিনিই সেই ফরিদা কিনা সেটা জানি না।’

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন,  ‘ভিজিডির চাল বণ্টনের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে অন্য একজনের নাম যোগ হওয়ায় একটু সমস্যা হয়েছে।’

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, অভিযোগকারী ফরিদা পারভীন ভিজিডির তালিকাভুক্ত আছেন। এব্যাপারে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ভিজিডির চাল ওই নারীকে দিতে সম্মতি জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গনপতি রায় বলেন,  ‘অভিযোগের কপি আমার হাতে এখনও পৌঁছেনি। অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’