সারা বাংলা

হেফাজত নেতাদের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় ‘মিথ্যাচার করায়’ অবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানিয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের নেতারা এই দাবি জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন।

লিখিত বক্তব্যে শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, ‘‘গত ২৬ মার্চ দেশবাসী যখন মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছিল ওইদিন বিকেল তিনটার পর থেকেই সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারকীয় তাণ্ডব চালায় হেফাজত সমর্থিত মাদ্রাসার ছাত্ররা। তাদের তাণ্ডব চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। 

‘ওইদিন তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের ম্যুরাল, কাউতলী জেলা পরিষদের ডাক বাংলো, সার্কিট হাউজ, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্যাম্পাস ও শহরের সর্বত্র বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত বিলবোর্ড ভাংচুর করে শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। 

‘পরদিন বিকেলে হেফাজতের তাণ্ডবের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের টি.এ রোড অতিক্রমকালে মাদ্রাসার ছাত্ররা টি.এ রোডের ঘোড়াপট্টি ব্রিজের গোড়ায় প্রতিবাদ মিছিলে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। 

‘এক পর্যায়ে জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মাইক থেকে ‘হাইয়া আলাল জিহাদ’ বলে এলাকাবাসীকে ঘর থেকে বের হয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হত‌্যার আহ্বান জানায়। সেসময় মাদ্রাসার ছাত্রদের সঙ্গে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতারা মিলে টি.এ রোডে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।” 

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন আরও বলেন, ‘‘তাণ্ডবের ঘটনার পর থেকেই হেফাজত নেতারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। গত ৫ এপ্রিল হেফাজত নেতারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাণ্ডবে হেফাজতের কেউ জড়িত নেই। আমরা তাদের (হেফাজতের) এই বক্তব্যকে নিছক মিথ্যাচার ও জঘন্য অপরাজনীতি বলে মনে করি। 

‘তাদের এই বক্তব্য ধর্মপ্রাণ মানুষকে মারাত্মকভাবে মর্মাহত করেছে। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি ২৭ মার্চ আমাদের দলের মিছিলের কেউ মাদ্রাসায় কিংবা তার আশে পাশে যায়নি। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে আমাদের মিছিল করার কারণেই হামলা-ভাংচুর হয়েছে। আমরা তাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই ২৬ মার্চতো আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না তাহলে ২৬ মার্চ কাদের উস্কানিতে শহরজুড়ে ভাংচুর করা হয়েছিলো?”

সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ শাহাদাৎ হোসেন শোভন হেফাজতের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি-বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে অবিলম্বে মিথ্যাচারের জন্য হেফাজত নেতাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল হেফাজতের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি-বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের মাহমুদ খান শ্রাবন, তামাচ্ছুম অনিক, আবদুল আজিজ অনিক, সাকিল ইসলাম তানিম, শেখ মঞ্জুরে মওলা, রুহুল আমিন আফ্রিদী, সাফাওয়ান আহমেদ প্রমুখ।