সারা বাংলা

উপকূলে অবাধে চলছে জাটকা শিকার

নদী ও সাগরের মোহনায় উপকূলের জেলেরা অবাধে জাটকা শিকার করছেন। নভেম্বর থেকে জুন এই আট মাস নদী ও মোহনায় উদ্ভিদ কণা খেতে আসে ইলিশের পোনা থেকে জাটকা হওয়া ইলিশ। তাই এ সময়টাতে জাটকা শিকার বন্ধ ঘোষণা করেছে মৎস্যবিভাগ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনে উপকূলের প্রায় ৭০ হাজার জেলে নির্বিচারে জাটকা শিকার করছে।

বরগুনার বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর মোহনায় গিয়ে দেখা যায়, সেসব এলাকায় জাটকা ধরছে তিন শতাধিক ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকা। এর মধ্যে ‘মায়ের দোয়া’ নামে একটি নৌকার জেলে, জনি ইসলাম (৩৪), জুয়েল (২২) ও বারেক মাঝির (৪০) সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির।

তারা দাবি করেন, অক্টোবর মাসের ২২ দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অবরোধে নদী ও সাগরে একবারের জন্যও জাল ফেলেননি তারা। সরকারের নিয়ম মেনেছেন। এরপরই পয়লা নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ফের জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা দিলেও তারা জাটকা ধরেননি। আশায় ছিলেন সরকারি সহায়তার। তবে অবরোধের পাঁচ মাস পার হলেও এখনও সহায়তা পাননি তারা। তাই পেটের তাগিদে জাটকা ধরতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

বিষখালী নদীর মোহনায় জাটকা ধরা অবস্থায় আরও কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর এই আট মাসের অবরোধে দুবার ৪০ কেজি করে মোট ৮০ কেজি চাল দিয়ে সহায়তা করে সরকার। তবে এখনও সহায়তা পাননি তারা।

সাগরের ওপর নির্ভরশীল জেলে আউয়াল মাঝি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘একদিন মাছ না ধরলে না খেয়ে থাকতে হয়। বন্ধ হয়ে যায় বাচ্চাদের লেখাপড়া। সরকার যদি সহায়তা না করে, তবে জাটকা ধরা বন্ধ করবে না কেউ। করোনার কারণে কাজের অভাব, জাটকা ধরা ছাড়া বিকল্প নেই।’

ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নদী ও সাগর মোহনায় জাটকা শিকার বন্ধ না করলে ইলিশশূন্য হয়ে পড়বে সাগর। আর লোকসানের মুখে পড়বে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেরা।’

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তা পৌঁছে যাবে জেলেদের মাঝে। জেলেদের সহায়তার পাশাপাশি সচেতন করতেও কাজ করছেন তারা। এরপরেও যদি জাটকা ধরা থেকে জেলেরা বিরত না থাকে তবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

উল্লেখ্য, বরগুনা উপকূলের প্রায় এক লাখ মানুষ জেলে পেশায় জড়িত।