সারা বাংলা

স্কুলে না গিয়ে ৮ বছর বেতন নিচ্ছেন শিক্ষক

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে বড় ভাই অধ্যক্ষ, ছোট ভাই ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি, আরেক ভাই সহকারী শিক্ষক; এ সুবাধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না গিয়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে বেতন উত্তোলন করে যাচ্ছেন এমন অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে কৈজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুনার রশিদ জেলা শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা, শাহজাদপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদ হোসেন ও শাহজাদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহাদাৎ হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তদন্ত করেছেন।  

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার চর-কৈজুরি গ্রামে অবস্থিত কৈজুরি উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার সহকারী শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) দীর্ঘ আট বছর ধরে স্কুল না করে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। তিনি ঢাকার মিরপুর-১ এ তৈরি পোশাকের সূতায় রঙ করার ব্যবসা করেন। তারপরও তিনি ওই স্কুল শাখার সহকারী শিক্ষক পদে থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। কাগজে-কলমে হাজিরা ঠিক থাকলেও তিনি কোনো দিন স্কুলে উপস্থিত থাকেন না। ক্লাস রুটিনেও তার নাম নেই।

কৈজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনার রশিদ বলেন, সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বড় ভাই আব্দুল খালেক কৈজুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ, মেঝ ভাই আব্দুল মালেক সহকারী শিক্ষক এবং সেজ ভাই ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ওই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা কমিটির সভাপতি। প্রতিষ্ঠানটি তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ কারণে জাহাঙ্গীর হোসেন কখনও ছাত্রদের ক্লাস নেননি। ক্লাস রুটিনেও তার নাম নেই।

হারুনার রশিদ বলেন, স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে হাজিরা খাতায় নিজেকে উপস্থিত দেখিয়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে নিয়মিতভাবে বেতন-ভাতা তুলছেন।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অভিযোগকারীর সঙ্গে আমার ভাইদের পূর্ববিরোধ রয়েছে। এরই জের ধরে তিনি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এমন অভিযোগ করেছেন।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কৈজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাই এ সম্পর্কে আগে কিছু বলা যাবে না।’

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করেছি। এরইমধ্যে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে।’