সারা বাংলা

ঘরমুখো মানুষে শেষ ভরসা ট্রাক, পিকআপভ্যান

সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণার কারণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ নিজ নিজ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। সব ধরনের দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঘরমুখো মানুষের শেষ ভরসা এখন ট্রাক, পিকআপভ্যান ও ব্যক্তিগত গাড়ি। 

কেউ কেউ ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোন যানবাহন না পেয়ে মোটরসাইকেল ভাড়া করে ফিরছেন গন্তব্যে। তবে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে নারী ও শিশুরা। তারা না পারছেন ট্রাকে উঠতে, না পারছেন পিকআপভ্যানে চড়তে। তাই বাধ্য হয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা প্রাইভেটকারে বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের রাবনা বাইপাস, আশেকপুর বাইপাস, করটিয়া, রসুলপুর, এলেঙ্গা, বিক্রমহাটিসহ বিভিন্ন অংশে সরেজমিন পরিদর্শনকালে এ চিত্রই দেখা যায়। 

কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন শত শত যাত্রী। কেউ কেউ ট্রাক থামিয়ে উঠে পড়ছেন। আবার কেউ কেউ দৌড়ে গিয়ে ট্রাকে উঠছেন। তবে নারী যাত্রীদের কিছু করার নেই। এ কারণে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা- কখন একটি বাস আসে! 

বগুড়া সদর উপজেলার বাসিন্দা রাবেয়া সুলতানা জানান, তিনি ঢাকায় একটি বেরসকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। লকডাউনের কারণে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই ঢাকায় না থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। সকালে তার শিশু কন্যাকে নিয়ে ঢাকা থেকে ভেঙে ভেঙে এলেঙ্গা পর্যন্ত এসেছেন। কয়েক ঘণ্টা হয়ে গেলেও এখন আর গাড়ি পাচ্ছেন না।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সোলায়মান হাসান জানান, ঢাকার সাভার এলাকায় তিনি রিকশা চালান। লকডাউনে বেকার বসে থাকতে হবে, তাই গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। বাস না চলায় বাধ্য হয়ে ট্রাকেই রওনা হয়েছেন। 

অপর ট্রাকের যাত্রী আজাহার আলী জানান, ঢাকায় ফুটপাতে কাপড়ের দোকান তার। লকডাউনে দোকান করতে পারবেন না, তাই গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। বাস বন্ধ তাই এখন তাদের শেষ ভরসা এখন ট্রাক, পিকআপভ্যান।

এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল বিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রায় ৩১ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। সাধারণত এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন ১৫/১৬ হাজার যানবাহন পারাপার হয়।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত জানান, যেসব বাস বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আটকা পড়েছিল। সেসব বাস নিজ নিজ ডিপো বা টার্মিনালে পার্কিং করার জন্য ফিরে যাচ্ছে। এসব বাসে কোনো যাত্রী পরিবহন করতে দেওয়া হচ্ছে না।