সারা বাংলা

কঠোর লকডাউনেও আমতলীতে গরুর হাট

কঠোর লকডাউন চলছে সারাদেশে। তবে এরই মধ্যে বরগুনার আমতলীতে চলছে জমজমাট গরুর হাট। মাস্ক পরা বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করাতো দূরের কথা, কোনোরকম সামাজিক দূরত্বও মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। 

গরুর হাটে স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতারা নানান অজুহাত দিয়ে বলছেন, আজকের হাট তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এসেছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ বাধা দেয়নি তাদের।

বরগুনার আমতলী পৌরসভার ফেরিঘাট এলাকার গরুর বাজার শুরু হয় বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথমে সংখ্যায় কম থাকলেও বিকেল হওয়ার সাথে সাথে হাজারও ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে সরগরম হয়ে ওঠে জেলার সর্ববৃহৎ এই গরুর হাটটি। ক্রেতা বা বিক্রেতা সবার অবস্থা একই, মাস্ক ও স্যানিটাইজার ছাড়াই রীতিমতো গায়ে গা মিলিয়ে দাঁড়িয়ে চলছে গরু বেচা-বিক্রি। যেখানে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বার বার বলে যাচ্ছে সরকার। সেখানে একটি সিগারেট খাচ্ছেন দুজনে ভাগ করে।

অলিউল্লাহ, সালাম মিয়া, জসিম হাওলাদারসহ বেশ কয়েকজন গরু বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয়।

তারা রাইজিংবিডিকে জানান, গত হাটে তারা বেশ কিছু গরু কিনেছিলেন। এ হাটে তাই বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করতে এসেছেন। তবে হাট না বসালে তারা আসতো না। 

দের কাছে মাস্ক না থাকা ও সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণ জানতে চাইলে কেউ বলেন মাস্ক আনতে মনে ছিলো না। কেউ বলেন আসার পথেই মাস্ক হারিয়ে গেছে।

গরু বিক্রেতা সোবাহান পাটোয়ারী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সরকার লকডাউন দিয়েছে, আমরা আসতে চাইনি। আমি নিয়মিত এই হাটে গরু ক্রয়-বিক্রয় করি। ইজারাদারের কর্মচারীরা ফোন করে জানালো লকডাউনেও হাট বসবে তাই এসেছি।’

গরু ক্রেতা ইকবাল হোসেন, মিরাজ খান, রাসেল হোসেনসহ একাধিক ক্রেতা রাইজিংবিডিকে জানান, ঈদের সময় গরুর দাম বেশি থাকে। তাই এখন কিছু গরু কিনে করে রাখতে পারলে লাভবান হবেন। তাই ঝুঁকি নিয়েই হাটে এসেছেন তারা।

হাটের ইজারাদারকে না পাওয়া গেলেও ইজারাদের ম্যানেজার নাসির হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘হাট বন্ধে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো চিঠি পাইনি। ইজারাদারের নির্দেশেই আমরা হাট চালু রেখেছি।’

ইজারাদার মোতাহার উদ্দিন মৃধা মুঠোফোনে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘হাটের দায়িত্বে আমার ম্যানেজার। হাটের পিছনে সময় ব্যায় করার মতো সময় আমার হাতে নেই। এসব নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না।’

প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে গরুর হাট চলছে এমন বিষয় নিয়ে শঙ্কিত সচেতন মহলের নাগরিকরা। 

বরগুনার পাবলিক পলিসি ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টু রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জেলায় প্রতিদিন করোনা রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের চোখের সামনে কীভাবে গরুর হাট বসে। যেখানে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। একজন ইজারাদার বা তার ম্যানেজার এই সাহস পায় না। এসব নিশ্চই উপজেলা প্রশাসনের কারসাজিতেই হচ্ছে।’

এদিকে এ বিষয়ে একাধীকবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানকে।

তবে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘লকডাউন অমান্য করে গরুর হাট বসানো ইজারাদারের ইজারা বাতিলের পাশাপাশি তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। জেলা প্রশাসন এটির তদন্ত করবেন।’