সারা বাংলা

কেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ?

করোনার  দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সারাদেশে চলছে দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন। বন্ধ দোকানপাট। চলছে না গণপরিবহনও। যোগাযোগ ব‌্যবস্থা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন গাজীপুরের ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীরা। এই লকডাউনের সময় আরও বাড়বে কি না, এই চিন্তায় তাদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তার ভাঁজ।      সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, চান্দনা চৌরাস্তা, জয়দেবপুর ও কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ফার্মেসি, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও পোশাক কারখানা খোলা রয়েছে। তবে, শপিংমল ও অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সড়ক-মহাসড়কগুলোয় অটোরিকশা-ইজিবাইক ছাড়া অন্যান্য গণপরিবহন চলাচল বন্ধ। ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীসহ নানা ধরনের দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ এসেছেন তাদের দোকানের সামনে। মার্কেটের পরিস্থিতি দেখতেও অনেক ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীরা আসেন  প্রতিষ্ঠানের সামনে।     কালীগঞ্জ বাজারের আজকাল ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মো. আল আমিন হোসেন বলেন, ‘সামনেই ঈদ। এখনই বেচাকেনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু লকডাউনে পড়ে গেলাম। দোকানে ঋণ করে অনেক টাকার কাপড়-চোপড়  তুলেছি। বিক্রি করতে না পারলে বড় লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এছাড়া এতগুলো ঋণের টাকা শোধ করবো কিভাবে? গত বছরেও লকডাউনে পরে অনেক ক্ষতি হয়েছে আমাদের। জানি না, লকডাউন এই আটদিনই থাকবে, না কি আরও বাড়বে।’ 

একই বাজারের সাদ ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী ও ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ী মিন্টু খন্দকার বলেন, ‘আমাদের কাপড়ের দোকান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি খোলা রয়েছে। তাহলে করোনা ভাইরাস কি শুধু আমাদের মতো ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ী দোকানেই? পোশাক কারখানা থেকে কি ভাইরাস ছড়াবে না?’ 

বাজারের আরেক ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ী রাইশা ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সামনে ঈদ, ঋণ করে দোকানে লাখ লাখ টাকার কাপড়  তুলেছি। বিক্রি করতে পারবো কি না, এটা বড় চিন্তার বিষয়। এছাড়া ঋণের বোঝা তো মাথার ওপরে আছেই।’    গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি উত্তর) জাকির হাসান বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে, সবাইকে সচেতন করতে। দোকানপাট বন্ধ রাখছে কি না, কল-কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি না, তা তদারকি করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।’

গাজীপুরের এডিসি (সার্বিক) মামুন সর্দার বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা আছে, সেগুলো তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া লকডাউনের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। ’

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত  প্রথম লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ওই সাতদিনের লকডাউন শেষে নতুন করে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে সরকার।