সারা বাংলা

রিকশা চালিয়ে হৃদয় জয় করে নিলেন নাট্যকর্মী মনসুর

নাটকই তার ধ্যান, নাটকই জ্ঞান। করোনার কারণে অর্থ সংকটে পড়ে নাটক বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি ময়মনসিংহের অনসাম্বল থিয়েটারের সভাপতি আবুল মুনসুর। তাই নাটক তৈরির অর্থ যোগাড় করতে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি। 

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শুধু প্রশংসা নয়, নাট্যাঙ্গনের সহযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষেরও হৃদয় জয় করে নিয়েছেন তিনি।

তবে নাটকের জন্য তার এই রিকশা চালানোর ঘটনাকে প্রতিবাদ বলে মনে করছেন অন্যান্য নাট্যকর্মীরা। নাটক তৈরিতে সরকারি বরাদ্দ যথাযথভাবে প্রকৃত নাট্যকর্মীরা পান না বলে অভিযোগ তাদের। এ পরিস্থিতিতে মনসুরের রিকশা চালানোর ঘটনা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আগামীর অশনিসংকেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পকেটে টাকা নেই। অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে আছে একটি নাটক। সেজন্য পরিচিত মহলে সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু বারবার ফিরে আসতে হয়েছে বিফল হয়ে। অবশেষে অর্থ সংগ্রহে রিকশা চালানো শুরু করেন নাট্যকর্মী আবুল মুনসুর।

সন্ধ্যার পর থেকে চার ঘণ্টা করে রিকশা চালান। এভাবেই চলছিল। হঠাৎ একদিন তার রিকশায় উঠে তাকে চিনতে পারেন এক পরিচিত সাংবাদিক। সবকিছু শুনে পত্রিকায় একটি নিউজ করেন তিনি। যা নিয়ে পরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। মুনসুরের আক্ষেপ- নাটক টিকিয়ে রাখতে নিরুপায় হয়েই রিকশা চালাচ্ছেন তিনি।

নাট্যকর্মী মুনসুরের রিকশা চালানো সাংস্কৃতিক অঙ্গনে চরম দৈন্যতার আভাস বলে মনে করছেন অন্য সাংস্কৃতিক কর্মীরা। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

মুনসুরের রিকশা চালানোর ঘটনায় লজ্জায় ভাসছেন নাট্যকর্মীরা। পাশাপাশি জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা হামিদুর রহমানও। সুযোগ পেলেই তিনি মুনসুরকে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।

সাংস্কৃতিক উন্নয়ন বিকাশ ছাড়া একটি সমাজ বা রাষ্ট্রের উন্নয়ন কখনই সম্ভব নয়। তাই অশনি সংকেত কাটিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে আরও সুসংগঠিত করার তাগিদ সংশ্লিষ্টদের।