সারা বাংলা

অনাবৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে বাগানের আম-লিচু্

চলতি বছরে অনাবৃষ্টির কারণে মেহেরপুরের বাগানের আম-লিচু ফেটে ঝরে ঝরে পড়ছে। এতে আম-লিচুর বাগান নিয়ে হতাশ মেহেরপুরের ফলচাষি ও ব্যবসায়ীরা।

বৃষ্টির অভাবে এ বছর লিচু ও আম আকারে বড় হয়নি, খরায় পুড়ছে বাগান। কোন কোন বাগানের অর্ধেক ফলই ফেটে ঝরে পড়ছে খরার কারণে। এতে এ বছর জেলার প্রায় দু’শ কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন আম লিচু চাষিরা।

এলাকার বিভিন্ন বাগান ঘুরে চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উঠতে শুরু করে আটি লিচু। এবার সে সময় পেরিয়ে গেলেও পর্যাপ্ত লিচু সংগ্রহ হচ্ছে না। চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত হয়নি বললেই চলে। মার্চ মাসে একবার আর মে মাসে দুই বার হালকা বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে লিচু আকারে অনেক ছোট হয়ে আছে। আবার উপরের অংশ খরায় পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। একদিকে ছোট আকৃতি, অন্যদিকে রঙ নষ্ট হওয়ায় লিচু বাজার মূল্যের অর্ধেকে বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন চাষিরা। এদিকে আম বাগানের অবস্থা আরও ভয়াবহ। অনাবৃষ্টিতে আম আকারে ছোট থাকার পাশাপাশি ঝরে পড়ছে অনেক।

লিচু বাগান মালিক মেহেরপুর সদর উপজেলার ঝাউবাড়ীয়া গ্রামের রাসেল বলেন, গেল বছরের মতই এবারও আমার ৮ বিঘা জমিতে লিচু ধরেছে। জাত আটি ও বুম্বাই। দুই লাখ টাকায় বাগানের ফল বিক্রি করা হয়। অনাবৃষ্টি ও খরতাপে লিচু গাছ থেকেই ফেটে পড়ছে। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়েছি। আমার মত অনেক বাগান মালিক ও ব্যবসায়ী লোকসানের আশঙ্কায় আছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে, জেলায় এ বছর ২৫০০ হেক্টর জমিতে আম ও ৭৮০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ ফুল ও ফল এসেছে বলে জানান বাগান মালিকরা।

কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অনাবৃষ্টিতে আম ও লিচু বাড়ছে না। বাগানে দেখা দিচ্ছে নানা রোগ ও পোকা মাকড়। অতিরিক্ত কীটনাশক স্প্রে করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না। এতে বাগান পরিচর্যার খরচ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এবারে আম ও লিচুতে ব্যাপক লোকসান হচ্ছে চাষি ও ব্যবসায়ীদের।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, ফল ও ফসলের জন্য এবার বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছে। জেলার সম্ভাবনাময় খাত আম ও লিচুর ফলনে বিপর্যয় ঠেকাতে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে ক্ষতি কিছুটা কমে আসবে বলে আশার কথা শোনান তিনি।