সারা বাংলা

টঙ্গীতে পোশাক শ্রমিকের বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২০ 

গাজীপুরের টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। 

সোমবার (১০ মে) দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। টঙ্গী জোনের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইলতুৎমিশ জানান, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। দুপুর ২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

পুলিশ ও কারখানার কর্মকর্তারা জানান, প্রতিদিনের মতো শ্রমিকরা সকাল ৯টার দিকে কর্মস্থলে যোগ দেয়। পরে মালিক পক্ষ থেকে শ্রমিকদের তিন দিনের ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানা থেকে বের হয়ে ১০ দিনের ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

আহত শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, এক শ্রমিক অফিসকক্ষে গিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে ঈদের ছুটির বিষয়ে কথা বলেন। তিনি শ্রমিকদের ১০ দিনের ছুটি চান। তখন মালিকপক্ষ থেকে সাতদিনের ছুটি মঞ্জুর করা হয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তিনি বের হলে পুলিশ এসে তার মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি রক্তাক্ত হন। 

শ্রমিক মিজানুর রহমান জানান, পরে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে তাকে আঘাতের কারণ জানতে চান। এ নিয়ে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের ওপর রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতাল প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

পোশাক কারখানার শ্রমিক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিসহ মোট ১০ দিনের ছুটি দাবি করা হয়েছিল। এরপর থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের নির্যাতন করে। সংঘর্ষে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে তিনি জানান।

দুপুর ২টা পর্যন্ত শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সেখান থেকে শ্রমিকদের সরাতে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পরে থেমে থেমে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশ সংঘর্ষ হয়। তখন শ্রমিকদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়।

আহত কয়েকজন শ্রমিক হলেন, মিজানুর রহমান (২৪), হাসান (২৬), রুবেল (২২), জাহিদ হোসেন (২৫), রনি (২৪), সোহেল (২২), রুবেল হোসেন (২৪), ইমরান হোসেন (২৪)। তারা সকলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় সংঘর্ষে রাবার বুলেটবিদ্ধ আট শ্রমিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।