সারা বাংলা

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে মেহেদী রাঙা উৎসব

রাত পোহালেই ঈদ। ঈদকে কেন্দ্র করে শিশুদের আগ্রহের শেষ নেই। অভিভাবকরাও সাধ্যমত চেষ্টা করেন শিশুদের সমস্ত বায়না মেটাতে। তবে বঞ্চিত থেকে যায় অসহায় পথশিশু ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা। তাদের মন ঈদের কোনো রঙেই ঠিক মতো রাঙে না।

এবার সুবিধা বঞ্চিত এই শিশুদের ঈদের রঙে রাঙাতে উদ্যোগ নিয়েছে পঞ্চগড়ের একদল তরুণ-তরুণী। শিশুদের নিয়ে মেহেদী রাঙা উৎসব পালন করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন চত্বরে শহরের বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধ শতাধিক অসহায় ও পথ শিশুদের হাতে মেহেদীর আল্পনায় রাঙিয়ে দেয় তারা। এতে বাঁধভাঙা আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে শিশুরা। 

জুঁই (৮) নামের এক পথশিশু বলে, ‘আমার খুব আনন্দ লাগছে। আমাকে কেউ কোনোদিন এভাবে কাছে ডেকে হাতে মেহেদী রাঙিয়ে দেয়নি।’

আঁখি আক্তার (৯) বলে, ‘আমরা গরিব মানুষ। প্রতি বছর ঈদে আমার বন্ধুরা মেহেদী হাতে দেয়। আমার কখনও সুযোগ হয়নি। এক আপু আমাকে আজ হঠাৎ করে মেহেদী লাগিয়ে দিলো। আমার খুব আনন্দ লাগছে।’ 

মেহেদী রাঙা উৎসবে অংশ নেওয়া তরুণী রাইকা ওয়ামিয়া ও নুসরাত জাহানের সঙ্গে কথা হয়। 

তারা বলেন, ‘আগামীকাল ঈদুল ফিতর। দিনটি সবার জন্য আনন্দের। আমরা চেষ্টা করছি ঈদের আনন্দ যেন গরিব, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। তাই এই শিশুদের হাতে মেহেদী রাঙিয়ে দিলাম। প্রতি বছর বাড়িতে ছোট ভাই বোনদের হাতে মেহেদী রাঙিয়ে দিই। তবে এবার সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের হাতে মেহেদী রাঙিয়ে দিয়ে অনেক ভাল লাগছে। 

মেহেদী রাঙা উৎসবের সমন্বয়ক রাকিব হাসান বলেন, ‘ঈদ সবার জন্য আনন্দের দিন। আমরা সবাই উদ্যোগ নিয়েছি এ বছর নিজে মেহেদী হাতে দেওয়ার পাশাপাশি গরিব, অসহায়, পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে মেহেদী রাঙা উৎসব পালন করব। তাই সবাই চাঁদা দিয়ে কিছু ফান্ড তৈরি করেছিলাম। সেই টাকা দিয়ে এসব শিশুদের হাতে মেহেদী রাঙিয়ে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসব শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে আমরাও আনন্দিত। সমাজের সবাই যদি এসব শিশুদের ছোটো ছোটো আনন্দের ভাগিদার হয়ে যায়, তাহলে তাদের মলিন মুখেও নির্মল হাসি ফুটে উঠবে।’