সারা বাংলা

বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করলো ছাত্রলীগ

মৌসুমী বেগম। বয়স ৭৫ বছর। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাইশুর বৃদ্ধাশ্রমে বসবাস তার। স্বজনহীন জীবনে নেই ঈদ, নেই আনন্দ। তার মতো আরও অনেকেই থাকেন এ বৃদ্ধাশ্রমে। তাদের নিয়ে এবার ঈদ উদযাপন করলেন গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

হাইশুর বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্যা ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ২০ সদস্যের একটি দল বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সন্তান আর পরিবারহীন এসব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতদের নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করে খাওয়ান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মমতা বিশ্বাস (৭০), গোলাপী সরকার (৭৫) ও হৈমন্তী সরকার বলেন, ‘এখানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আছি। আমাদের আপনজন নেই, পরিবার নেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এখানেই আমাদের থাকতে হবে। বাবারা আমাদের কাছে এসেছে। খোঁজ-খবর নিয়েছে। আমরা যেন পরিবার আর সন্তানের পরশ পেয়েছি। আল্লাহ, ইশ্বর যেন এদের ভালো করে।’

গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়াল বলেন, ‘ছাত্রলীগ শুধু রাজনৈতিক দল নয়। ছাত্রলীগ সাধারণ মানুষের আস্থার স্থল। বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতরা যেন মনে না করে যে, তাদের কেউ নেই। তাই, আমরা এখানে আশ্রিত মা-বাবাদের সঙ্গে সময় কাটালাম।’

গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্যা বলেন, ‘এ বৃদ্ধাশ্রমে হিন্দু ও মুসলমান সব ধর্মের লোক আছে। এটি অসাম্প্রদায়িকতার উদাহরণ। এখানে সবাই একটি পরিবারের সদস্য হয়ে বসবাস করনে। ধর্মের বিভেদ তাদের বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেনি। শুধু ঈদ নয়, সব সময় এই মা-বাবাদের পাশে থাকবে ছাত্রলীগ।’

হাইশুর বৃদ্ধাশ্রমের তত্ত্বাবধায়ক আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘আমার এখানে এখন ২২ জন মা-বাবা আছেন। বিভিন্ন জনের কাছে থেকে এক বেলার খাবার যোগাড় করে তাদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আজ পরিবার-সন্তানহীন মা-বাবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছে। এতে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও দুঃখ-কষ্ট ভুলেছেন তারা। বিত্তবানরা এগিয়ে এলে এখানে আশ্রিত মা-বাবারা একটু ভালো থাকতে পারবেন।’