সারা বাংলা

খানাখন্দে ভরা হিলি বন্দর সড়ক, ঘটছে দুর্ঘটনা

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের সড়কগুলোতে খানাখন্দ বেড়েছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব সড়কের যাত্রীদের। অন্যদিকে সড়কে ছোট খাটো দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্যিক হয়ে উঠেছে। 

হিলি বন্দরের সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, চেকপোস্ট থেকে বন্দর গেট, চারমাথা মোড় থেকে দক্ষিণে মহিলা কলেজ এবং সিপি থেকে ধরন্দা ফকিরপাড়া সড়কগুলোর বেহাল দশা। সড়কগুলো ছোট-বড় খানাখন্দে ভরা। আর এ কারণে দুর্ঘটনায় পড়ছে বাস, ট্রাক, কোচ, ট্রাক্টর, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি, অটোরিকশা, অটোবাইক, রিকশা-ভ্যান ও মোটরসাইকেল।

বিশেষ করে সিপি থেকে ধরন্দার সড়কটির অবস্থা খুবই শোচনীয়। কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে সড়কটি ভেঙে কোথাও কোথাও এক হাটু গভীর খাদে পরিণত হয়েছে। নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। পানিতে উঁচু-নিচু সমান দেখানোর কারণেও দৃর্ঘটনা বেড়েছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন।

জানা যায়, প্রতিদিন সড়কের এসব স্থান পার হতে প্রতিটি যানবাহন কম-বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।  ঈদের দিন দুপুরেও একটি অটোরিকশা উল্টে ৯ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে।  এমন দুর্ঘটনা এখানে নিত্যদিনের ঘটনা।

এদিকে ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে বন্দর গেটে প্রবেশের রাস্তায় চরম ঝুঁকি নিয়ে আসতে হচ্ছে। ভারি ওজন থাকায় মাঝেমধ্যেই খাদে ফেঁসে যাচ্ছে। আবার এমনও দেখা যায়, গাড়ি ভেঙে পড়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। 

দিনাজপুরগামী ধান বোঝাই ট্রাকচালক জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন সড়কে যাতায়াত করেছি, এমন বিপজ্জনক সড়কের কবলে পড়িনি। এই ধরন্দার রাস্তা এতো খারাপ তা ভাষায় প্রকাশের নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

দিনাজপুরগামী বাসচালক রেজাউল করিম বলেন, দিনে দুই বার আসা-যাওয়া করতে হয় হিলিতে।  কিন্তু হিলির যে রাস্তা, তাতে টেনশনেই থাকতে হয়। ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী নিয়ে থাকতে হয়। খানাখন্দে ভরা স্থানগুলো পার হতে ভয় লাগে।

অটোরিকশাচালক রবিউল ইসলাম বলেন, হিলি থেকে বিরামপুরে ভাড়া মারি। তিন চাকার গাড়ি আমার, একটু উঁচু নিচু হলেই উল্টে যায়। কয়েকদিন আগে এই ধরন্দায় আমার গাড়ি উল্টে আমিসহ যাত্রীরা আহত হয়েছিলাম।

ভ্যানচালক আশাদুল ইসলাম বলেন, হারা গরীব মানুষ, পেটের দায়ে ভ্যান চালাই। এই আস্তা (রাস্তা) দিয়ে হামাক সব সময় লোক নিয়ে যাবা নাগে। আস্তার যে অবস্থা হচে, কখন যে কি হয়? সেদিন চার জন মেয়ে মানুষ নিয়ে যাবার সময় ভ্যান মোর উল্টে গেলি। মিচ্চেনার (অল্পের) জন্য কেউ মরেনি।

একজন মোটরসাইকেল আরোহী  বলেন, যত খাদ আর পানি, বোঝা যাচ্ছে না কোন দিক দিয়ে রাস্তাটি পার হবো। দেখছি বড় বড় খাদের তৈরি হয়েছে। একবার পড়ে গেলে অবস্থা খারাপ হবে।

স্থানীয় নয়ন শেখ বলেন, এই সড়কের যে অবস্থা, তাতে চলাফেরা একেবারে কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।  প্রতিদিন এখান দুর্ঘটনা ঘটছে। আমি নিজেও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ বয়ে যাতায়াত করছি।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি ও হাকিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ হারুন রাইজিংবিডিকে জানান, ধরন্দার বেইলি ব্রিজ থেকে সড়কটির টেন্ডার হয়ে গেছে, দুই একদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাব-ইন্জিনিয়ার হাফিজ রহমান জানান, আমি দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্দেশ পেয়েছি। হিলির যে সড়কগুলো খানাখন্দে ভরে গেছে অচিরেই মেরামত শুরু করবো।

এবিষয়ে দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা সুনীতি চাকমা বলেন, হিলি একটি স্থলবন্দর। এই বন্দরের সড়কগুলোকে ঢালাইয়ের মাধ্যমে উন্নত সড়ক তৈরির কাজ আমরা হতে নিয়েছি।  তবে আপাতত বর্ষায় যে সমস্ত সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে সেগুলো কাল-পরশুই মেরামতের কাজ শুরু করবো।