সারা বাংলা

ভালোবাসার টানে আমেরিকা থেকে চাঁদপুরে

ভালোবাসার টানে সুদূর আমেরিকা থেকে ৫৫ বছর বয়সী এক মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নারী জন্স জিউনাবচন চাঁদপুর সদরের আশিকাটিতে ছুটে এসে বিয়ে করলেন ৫৩ বছর বয়সী শাহাদাৎ হোসেনকে। ১২ হাজার টাকা দেনমোহরে তাদের বিবাহ হয়।

শনিবার (৫ জুন) দুপুরে ঢ়ালদিয়া গ্রামে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে চাউর হয়। এই নব-দম্পত্তিকে দেখার জন্য বিয়ে বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। 

অপর দিকে প্রেমের টানে মার্কিন নারীর চাঁদপুরে আসার বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তবে এই মার্কিন নারীকে পেয়ে শাহাদাৎ যেমন খুশি তেমনি পরিবারের সদস্যরাও আনন্দিত। 

জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার ঢ়ালদিয়া গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির কামাল উদ্দিন প্রধানের বড় ছেলে মালেশিয়া প্রবাসী শাহাদাৎ হোসেন প্রধানীয়া মালেশিয়া থাকা অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ার ফেসবুকের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্স্ জিউনাবচনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত ১ বছর পূর্বে শাহাদাৎ মালেশিয়া থেকে বাংলাদেশের চাঁদপুরে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। আর জন্স জিউনাবচন ভালোবাসার টানে গত শনিবার (৫ জুন) ছুটে আসেন চাঁদপুরে তার একান্ত ভালোবাসার মানুষ শাহাদাৎ হোসেনের কাছে। আর পরদিন ইসলামিক শরিয়ায় তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। গ্রামের বাড়িতে বিদেশি বউ, আত্মীয়-স্বজনরা তাই আনন্দিত। এমন দৃশ্য দেখতে প্রধানীয়া বাড়িতে এখন নারী-পুরুষের ভীড় জমেছে।

এদিকে শাহদাতের ছোট ভাই আবু জাফর দুবাই থাকা অবস্থায় আরেক মার্কিন নারী ফাতেমা মোহাম্মদ মুছার প্রেমে পড়ে দীর্ঘ ১১ বছর পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তারই বান্ধবী শাহাদাতের স্ত্রী জন্স জিউনাবচন।

শাহদাতের ছোট ভাই জাফরের বউ মার্কিন নারী ফাতেমা মোহাম্মদ মুছা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সময়টা ছিল ২০১০। তিনি (জাফর) ছিলেন বাংলাদেশে এবং আমি প্রবাসে। যাই হউক আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১১ বছর হলো। আমি তাকে এবং তিনি আমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসেন। এই দেশে আমি এসে খুবই আনন্দিত।

দীর্ঘ ভালোবাসার পর শাহাদাত ও মার্কিন নারী জন্স জিউনাবচন দুজনের বিয়ে হওয়ায় দুজনেই খুশি। এ ব্যপারে মার্কিন নারী জন্স জিউনাবচন বলেন, আমি ইউএসএ থেকে এসেছি। আমি একজন ব্যবসায়ী। শাহাদাৎ হোসেনকে আমি চিনি। আমরা দুজন দুজনকে চেয়েছি। পরে কোভিড-১৯ শিথিল হলে আমরা মিলিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। আমরা নিয়মিত ইন্টারনেটে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখতাম। এখন কোভিড-১৯ পরিস্থিতি শিথিল হওয়ায় আমি এদেশে আসতে পেরেছি। ইনশাল্লাহ আমরা দুজনে বাংলাদেশে বিবাহ করেছি।’

আমাদের দেশ কেমন লাগছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খুব ভালো এখানকার লোকজন। প্রচুর প্রচুর গাছ। সুন্দর সুন্দর ফল। আমি ফল খেতে ভীষণ ভালোবাসি। বিশেষত এগুলো ডায়েড করার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি তার দেশের লোকজনকে কোন মেসেজ জানাতে চান কিনা? এমন জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে আসতে পারো। সুন্দর সময় কাটবে। কেননা এখানে সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে এবং এটি নিরাপদ।

এদিকে ভালোবাসার পবিত্র সম্পর্কের টানে আমেরিকা থেকে ছুটে আসায় ইসলামি শরিয়া মোতাবেক শাহাদাতের সাথে জন্স জিউনাবচনের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহাদাতের চাচা শাহজাহান প্রধান ও ভাবী শাহনাজ বেগম। তারা আরও জানান, জন্স জিউনাবচন এবং ফাতেমা মোহাম্মদ মুছার ব্যবহার অত্যান্ত নম্র ও মার্জিত। তাদের আগামী ২০ জুন দেশ ত্যাগের কথা রয়েছে। তবুও আমরা চেষ্টা করছি সময়টা কয়েক মাস বাড়ানো যায় কিনা।

অপরদিকে আমেরিকান নাগরিক প্রেমিকা জন্স জিউনাবচনকে নববধূ হিসেবে পেয়ে শাহাদাত যেমন খুশি তেমনি উল্লাসিত তার স্বজনরাও। আর এলাকাবাসী পেয়েছে একই বাড়ীতে দুই বিদেশিনীকে। তাই সবাই তাদের দাম্পত্যজীবন সুখের হউক এমনটাই প্রত্যাশা করছে।