সারা বাংলা

সাড়া ফেলেছে তারিফের অক্সিজেন তৈরির মেশিন

পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের মশুরিয়াপাড়া মহল্লার মৃত আব্দুল সালাম ও তাসলিমা খাতুন দম্পতির সন্তান তাহের মাহমুদ তারিফ। উপজেলার সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট তারিফ। ২০২০ সালের ২ আগস্ট অক্সিজেনের অভাবে বাবার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে করোনায় অক্সিজেনের অভাবে মানুষের মৃত্যুর মিছিল তাকে নাড়া দেয়। সিদ্ধান্ত নেয় কম খরচে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরির।

প্রায় ৭ মাসের চেষ্টায় কনসেনট্রেটর তৈরিতে সফল হয় তারিফ। এর আগে চারবার ব্যর্থ হয় তার চেষ্টা। পঞ্চমবার গিয়ে সফলতা ধরা দেয়।

যন্ত্রটিতে ডায়নামো’র সাহায্যে প্রথমে একটি সিলিন্ডারে বাতাস প্রবেশ করে। বাতাসে অক্সিজেন ছাড়াও অন্যান্য উপাদান থাকে। জিওলাইটের সাহায্যে বাতাস থেকে অক্সিজেন এবং অন্যান্য উপাদানকে পৃথক করা হয়। যন্ত্রটি প্রতি মিনিটে ২৫ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। 

মেশিনটি বানাতে মায়ের কাছে ১৫ হাজার টাকা চায় তারিফ। এই উদ্যোগে তার পরিবার সবসময় পাশেই রয়েছে। দেশে দুর্যোগ মুহূর্তে একজন শিক্ষার্থী বাতাস থেকে অক্সিজেন আবিস্কার করেছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারের স্বীকৃতি প্রয়োজন।

পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে তারিফের উদ্ভাবনকে আরও উন্নত করা গেলে তা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরিভাবে অক্সিজেনের অভাব পূরণে সহায়ক হবে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ইনোভেশন টিমের বিশেষজ্ঞ দল তারিফের উদ্ভাবনটি দেখেছেন। তারা কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। সেগুলো নিয়ে কাজও চলছে। 

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জনগণের কথা ভেবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে অক্সিজেন কনসেনট্রেটরটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবে এমনটাই প্রত্যাশা।