সারা বাংলা

সন্তানের মমতায় কোরবানির পশু পালন

২০২০ সাল থেকে কোরবানির উদ্দেশ্যে চারটি গরু পালন করেছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বরুরিয়া গ্রামে হাবিল মিয়া-শেফালি বেগম দম্পত্তি।

জেলার নামের সাথে মিলিয়ে গরুর নাম দিয়েছেন মানিক। মানিকের জোড় হিসেবে আছে রতন। আর স্বভাবে কিছুটা দুষ্টু হওয়ায় একটি উপাধি পেয়েছে রক, অপরটি আন্ডারটেকার। নাম শুনলেই মনের পর্দায় ভেসে ওঠে রেসলিং জগতের দুই তারকার চেহারা।  সন্তানের মমতা নিয়েই গরু চারটি লালন পালন করছেন এ দম্পতি। 

৩০ মণ ওজনের রতনের দাম ১০ লাখ ৪৯৯ টাকা, ২৫ মণের মানিক ৮ লাখ ৪৯৯ টাকা, ২২ মণের আন্ডারটেকার ৭ লাখ ৪৯৯ টাকা ও ২০ মণ ওজনের রকের ৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৯৯ টাকা দাম নির্ধারণ করেছেন এ দম্পতি। কেউ চারটি গরু এক সঙ্গে কিনলে তার জন্য দেড় লাখ টাকার আরেকটি গরু উপহার হিসেবে দেওয়া হবে।

প্রতিদিন গরুগুলোকে দেখতে বাড়িটিতে ক্রেতাদের পদচারণা বাড়ছে। সেই সাথে আশেপাশের এলাকার অনেকেই গরু দেখতে আসছেন, কেউ কেউ সেলফিও তুলছেন।

প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের দিক নির্দেশনায় গরুগুলো লালন পালন করা হয়েছে। তাদের পরামর্শেই মোটাতাজা করতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়েছে।

খামারিরা পশু লালনপালন করেন অন্যরা তা কিনে নিয়ে কোরবানি দেন। সেই কোরবানিতে কতটুকু দরদ মেশানো থাকে তা ওই ক্রেতা হয়তো অনুধাবন করতে পারেন না। কিন্তু বছরব্যাপী বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে মাতৃস্নেহে লালন পালন করার পর পশুগুলোর দড়ি যখন ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হয়, তখন ওই লালন-পালনকারীর অন্তর যেনো বেদনায় ভেঙে পড়তে চায়। এটাও হয়তো এক ধরনের কোরবানি। অর্থের বিচারে এই কোরবানির কোনো মূল্য না থাকলেও প্রতি বছর গরু বিক্রির পর শেফালি-হাবিল মিয়ার মতো খামারিরা ঠিকই নীরবে চোখের কোন মুছে নেন।