সারা বাংলা

৫ বছর আগে হয়েছে প্রতিবন্ধী কার্ড, ভাতা মেলেনি আজও

শারীরিক প্রতিবন্ধী আসেদা বেগম (৩৬)। পাঁচ বছর আগে বহু কষ্টে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু কার্ডধারী হয়েও তার ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা। 

নিজের বলতে কোনো জমিই নেই। অন্যের বাড়িতে থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনো রকমে বেঁচে আছেন তিনি।

আসেদা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার মেয়ে।

আসেদা বেগম বলেন, ‘জন্মের পর থেকে আমি এই ভিটিদাউদপুর গ্রামে থাকি। নিজের কোনো বাড়ি নাই, তাই অন্যের বাড়িতে থাকি। গ্রামের কয়েকজন মিলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নূর মুহাম্মদের (৫২) সঙ্গে বিয়ে দেয়। সেই থেকে পাগল জামাই নিয়ে থাকি। পুলা-মাইয়া নাই।’

পঙ্গু আসেদা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই কার্ড ঘরে রেখে কী লাভ? পাঁচ বছর আগে কার্ড পাইছি (কার্ড নম্বর ১২১১৩৬৬৫৭৫৪৪৩৫-০৬)। এই কার্ড তো আমারে খাওন দেয় না। গ্রামের মেম্বারের কাছে গত চার বছর ধরে গেলেও তিনি আমারে কোনো সাহায্য করেননি। তিনি নিজের পরিচিতদের ভাতা দেন।’

অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) নাছির মিয়া বলেন, ‘কার্ড থাকলেই হয় না। ভাতা পেতে হলে কার্ডের বই বানাতে হবে। আসেদাকে কার্ডের বই বানিয়ে দিয়ে দ্রুত ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’

পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খন্দকার বলেন, ‘আমার কাছে এলে আমি ব্যবস্থা করে দেব। সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্যই এই কার্ডের ব্যবস্থা করেছে। উনিও ভাতা পাবেন।’

উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক আফরুজা আফরীন বলেন, ‘পাঁচ বছর কার্ড থেকেও ভাতা পাচ্ছে না এটা দুঃখজনক। আসেদা বেগম কার্ডটি নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, কেন এমনটি হলো?’ 

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে. এম. ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে কার্ড পেয়েও ভাতা পাবে না, এটা দুঃখজনক। আমি সমাজসেবা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।’