সারা বাংলা

মা নিখোঁজ, ২৩০ কি.মি. বাইসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরলো ছেলে

বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে মায়ের নিখোঁজ সংবাদ আসে। দ্রুত বাড়ি যাওয়া দরকার। এদিকে চলমান লকডাউনে গণপরিবহনও বন্ধ। অবশেষে মায়ের টানে  বাইসাইকেল চালিয়ে ২৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় নিজের বাড়ি পৌঁছান ছেলে সোহেল আহমেদ (৩৫)।

শনিবার (৩১ জুলাই) রাতে ঢাকার কর্মস্থল থেকে রওয়ানা দিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা বাইসাইকেল চালিয়ে রোববার (১ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের লংগুড়পাড় গ্রামে বাড়িতে পৌঁছান তিনি।

লংগুড়পাড় গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ও মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আসিদ আলীর ছোট বোন হাজেরা বিবি (৪৮)। তিনি বুধবার (২৮ জুলাই) রাতে একই গ্রামে বড় ভাই আসিদ আলীর বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে প্রতিবেশী রকিব মিয়ার বাড়িতে রাতে ঘুমান। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ভোরে ঘুম থেকে উঠে রকিব মিয়ার স্ত্রীকে চা বানানো কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যান হাজেরা বিবি। রকিব মিয়ার স্ত্রী চা তৈরি করে হাজেরা বিবিকে আর পাননি।

সকাল পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে গেলেও হাজেরা বিবি বাড়িতে না ফেরায় হাজেরার ছেলের ঘরের নাতিন শাম্মী (১০) বাড়ির পাশে দাদা আসিদ আলীর বাড়িতে গিয়ে দাদির খোঁজ করেন।

আওয়ামীলীগ নেতা আসিদ আলী বলেন, বোনের বাড়িতে গিয়ে দেখেন দরজা তালাবদ্ধ। বাইরে বাতি জ্বলছে। গোয়ালে গাড়িগুলোও ডাকাডাকি করছে। তখন তিনি আশপাশ এলাকার বাড়ি-ঘরে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে সম্ভাব্য সব আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও সন্ধান না পেয়ে গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। 

শনিবার (৩১ জুলাই) মোবাইল ফোনে ঘটনাটি ঢাকায় অবস্থানরত ভাগ্নে সোহেল আহমেদকে জানান আসিদ আলী। সোহেল মায়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে নিজের বাইসাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে রওয়ানা দেন। 

সোহেল বাড়ি পৌঁছে লোকজন নিয়ে রোববার (১ আগস্ট) সারা দিন বাড়ির আশপাশের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকার ঝোঁপঝাড়, খাল, ডোবা, পুকুর, আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি খুঁজেও মা হাজেরা বিবির সন্ধান পাননি।

সোহেলের খালাতো ভাই সেলিম মিয়া জানায়, প্রায় ২০/২৫ বছর আগে একইভাবে সোহেলের বাবা মানিক মিয়াও নিখোঁজ হন। যার সন্ধান এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদস্ত) সোহেল রানা নিখোঁজের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া নারীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।