‘বাপ-দাদাগো কাছে অনেক মহামারির কথা শুনছি। তয় এই জনমে নিজের চোখে করোনার মহামারি দেখলাম। শুনছি টিকা নিলে ভালো থাকন যাইবো। সবাই শহরে যাইয়া টিকো নেয় শুনছি। আমরা গ্রামে থাকনে টিকা নিবার পারি নাই। ক্যামনে শহরে যাইয়া টিকা নিমু, তা জানতাম না। আজকে ইউনিয়নে টিকা নিবার পাইরা ভালো লাগতেছে। এতো সহজে টিকা পামু ভাবি নাই, শেখের ব্যাটিরে ধন্যবাদ।’
মানিকগঞ্জের গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদে তেঘুরী এলাকার সুরভী বেগম (৫৫) টিকা নিতে এসে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এভাবেই এ প্রতিবেদককে কথাগুলো বলছিলেন।
শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদে উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন এ ইউনিয়নের টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন সরকার উপস্থিত ছিলেন।
সুরভী বেগমের মতো রোকেয়া বেগম (৫০) বলেন, ‘আমরা গ্রামের মানুষ। আমাগো প্রতিদিন কাম কাজ কইরা খাওন লাগে। শহরে গিয়া টিকা নিবার গেলে সারাদিন লাইগ্যা যাইতো। এখন তো বাড়ির কাছ থ্যাইয়া টিকা নিলাম। বাড়ি গিয়া বাকি কাম কাজ করবার পারুম।’
ঘোনা শ্রীরাম বাড়ি এলাকার ৭৭ বছর বয়সী সলীম দেওয়ান বলেন, ‘বয়সের ভারে ঠিকমতো চলবার পারিনা। টিকাকেন্দ্র কাছে হওয়াতে আসবার পারছি। আসার পর ভোটার আইডি কার্ড দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকা নিবার পারছি। কোনো ঝামেলা নাই।’
গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন সরকার বলেন, ‘ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে প্রবীণদের অগ্রাধিকার দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি সফল করার চেষ্টা করছি। সকালের দিকে বৃষ্টি হলেও সাধারণ মানুষের আগ্রহের কোন কমতি নেই।’
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, সারাদেশের মতো মানিকগঞ্জের ৬৫টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় সকাল ৯টা থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩টি করে টিম কাজ করছে। প্রতিটি টিমে ২ জন টিকাদান স্বাস্থ্যকর্মী ও ৩ জন করে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। প্রতিটি টিম দুইশো করে টিকা দিতে পারবে। সেই হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়নে ছয়শো করে লোক টিকা গ্রহণের সুযোগ পাবেন।