সারা বাংলা

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশি চাঁদপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অসহায়রা

চাঁদপুর সদরের লক্ষ্মীপুর গ্রামে বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে নদী ভাঙন কবলিত মেঘনার ভাঙনের শিকার গৃহহীণ অসহায় দুঃস্থ মানুষগুলো ঘর বেঁধেছেন। আর এই গৃহগুলোর মালিক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেল, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তৈরিকৃত এসব ঘরগুলোর আঙিনায় ছোট ছেলেমেয়েরা বেশ হৈ-হুল্লোড় করছে। নিজেদের পাওয়া ঘরের সামনে একে অপরের সাথে খেলায় মজেছে। এদের বাবা মায়েরা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে রয়েছেন ব্যস্ত। আবার কাউকে দেখা গেল বিনোদন পেতে ঘরে বসেই টিভি ছেড়ে নানান অনুষ্ঠানাদি দেখছেন।

উপকারভোগী মমতাজ বেগম, প্রাণ গোপাল, সাবিত্রী রাণী, আব্দুর রহমানসহ অন্যান্যরা জানান, নদীর তীরে বসবাস ছিল। তাও কোনরকমে একটি ঝুঁপড়ি ঘরে থাকতাম। নদীর ভয়াল থাবা সেটিও কেড়ে নিয়েছিল। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেলাম। তার ওপর পাকা ঘর। বিশ্বাস হচ্ছে না, এই ঘরগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগও রয়েছে। প্রতিটি কক্ষ নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছি। টিভি উঠিয়েছি ঘরে। এমনকি ডিস সংযোগও লাগিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা এভাবেই আমাদের পাশে থাকবেন সব সময় এই প্রত্যাশা করছি।

প্রায় ২৫ মিনিট সময় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য ঘর পাওয়া রুবেল ত্রিপুরা, পিংকী ত্রিপুরা, দুলাল ত্রিপুরা, মেঘনাথ ত্রিপুরা, চম্পা ত্রিপুরা, রাণী ত্রিপুরা, সীমা ত্রিপুরাসহ আরও বেশ কয়েকজন ঘরের মালিকের সাথে কথা হলে তারা জানান, গৃহশূন্য জীবনে আমাদের কষ্টটা যে কতোটা বর্ণনাতীত ছিল। সেই বিষ নিঃশ্বাসের আমরা এখন অক্সিজেনে নিঃশ্বাস নিচ্ছি। গেল এই দেড়-দুই মাসে পাকা এই ঘরে উঠে বেশ শান্তিতে আছি। পানি খাওয়ার জন্য নলকূপেরও ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি পাওয়ায় বেশ আনন্দ লাগছে।’

এ ব্যপারে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ বলেন, ‘চাঁদপুর সদরে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৫৭টি ঘরের ৫২টিই লক্ষ্মীপুর গ্রামে করা হয়েছে। এখানে আমাদের ত্রিপুরা নৃ-গোষ্ঠীর ১৩টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোও সহ-অবস্থান করছে। এটি মুজিববর্ষে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের একটি দৃষ্টান্ত বলতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই ঘরগুলো করতে পেরে আমরা নিজেরাও তৃপ্ত। একটি মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে প্রধানমন্ত্রীর এই কথাটি যেদিন তিনি মুখ থেকে যখন বের করেছেন। সেই থেকেই আমরা তার নির্দেশনায় তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরা আগামী দিনে ভালো থাকলেই আমাদের এ কাজে নামাটা স্বার্থক ও সফল হবে।’

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি এই পরিবারগুলোকে ভালো রাখার। প্রতিনিয়ত খোঁজ-খবর নেওয়াসহ তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রীও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন তাদের সাবলম্বী করার ব্যপারেও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’