সারা বাংলা

ষাটগম্বুজে দর্শনার্থীদের ভিড়, অনুমতি মেলেনি সুন্দরবনের

দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদসহ বাগেরহাটের বিনোদন কেন্দ্রগুলো দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) জেলার সকল বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়। তবে ষাটগম্বুজ মসজিদ ও বাগেরহাট যাদুঘর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় দুপুর দুইটায়।

এদিকে বাগেরহাটের আরেক বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে এখনও দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। কবে নাগাদ সুন্দরবনে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবে সে বিষয়েও কিছু জানানো হয়নি।

ষাটগম্বুজ মসজিদ কমপ্লেক্স ও বাগেরহাট যাদুঘর দীর্ঘদিন পর খোলা পেয়ে খুশি দর্শনার্থীরা।

মাগুরা থেকে ষাটগম্বুজে আসা শিক্ষার্থী মো. রাকিব হোসেন ও সামিউল আলিম বলেন, জরুরী কাজে বাগেরহাটে আসছিলাম। কাজ শেষে জানতে পারলাম ষাটগম্বুজ মসজিদ খোলা। তাই সুযোগটা কাজে লাগালাম। ষাটগম্বুজ মসজিদ ও বাগেরহাট যাদুঘর ঘুরে অনেক ভাল লেগেছে।

খুলনা থেকে আসা তাফসির কবির খান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ষাটগম্বুজ মসজিদ যে বন্ধ সে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দুপুর একটার দিকে ষাটগম্বুজ মসজিদের সামনে আসছি। এসে শুনি এখনও খোলার কোন নির্দেশনা আসেনি। গেট থেকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন। তারপরে দুইটার পরপর প্রবেশ করেছি।

বাবা-মায়ের সাথে ঘুরতে আসার মিথিলা আক্তার বলেন, অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল ষাটগম্বুজে আসব। কিন্তু পারিনি। সকালে বাবা বললেন, সব পর্যটন কেন্দ্র খুলেছে, আজকে যাই। পরিবারের সবাই মিলে চলে আসলাম। খুবই ভাল লেগেছে এখানে এসে।

দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অন্তত দেড়শতাধিক দর্শনার্থী ষাটগম্বুজ মসজিদে প্রবেশ করেছেন। তবে ষাটগম্বুজ মসজিদ ও খানজাহান আলীর মাজারে দর্শনার্থীদের আধিক্য থাকলেও বাগেরহাট শহরের দশানীস্থ পৌর শিশু পার্ক, বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুরের সুন্দরবন রিসোর্ট, চুলকাঠি এলাকার চন্দ্রমহল ছিল দর্শনার্থী শূন্য।

বাগেরহাট শহরের দশানীস্থ পৌর শিশু পার্কের টিকিট বিক্রেতা আসমা আক্তার ডলি বলেন, দীর্ঘদিন পরে সকালে পার্ক খুলেছি, কিন্তু তেমন কোন দর্শনার্থী আসেনি। সারাদিনে ১০-১২ জন লোক এসেছে।

বাগেরহাট যাদুঘরের অ্যাটেন্ডেন্ট আহাদ আলী বলেন, দুপুরে খোলার পর থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছে। দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যারা আসছেন, তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাদুঘর ও ষাটগম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করছেন।

ষাটগম্বুজ মসজিদের সাইড পরিচালক (টিকিট বিক্রেতা) খান আবু তালেব বলেন, দুপুর থেকে ৫ টা পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক দর্শনার্থী ষাটগম্বুজে প্রবেশ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলে প্রবেশ করছে।

পূর্ব সুন্দরবনের ডিএফও (বিভাগীয় বনকর্মকর্তা) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য কোন আদেশ এখনো আসেনি, তাই পর্যটকদের জন্য এটি উন্মুক্ত করা যাচ্ছেনা।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকার পর্যটনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। সরকারি ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বিকেলে ষাটগম্বুজ মসজিদ কমপ্লেক্স উন্মুক্ত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ষাটগম্বুজ মসজিদের গেটে দর্শনার্থীদের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ড সেনিটাইজার দেওয়া হয়েছে।