সারা বাংলা

বরিশালে ময়লা পরিষ্কার না-করার ঘোষণা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের

বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা পরবর্তী পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ এবং বিসিসি মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে নগরীর ময়লা আবর্জনা অপসারণ বন্ধ করে দিয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

গত বুধবার রাত থেকে টানা তিন দিন সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আবর্জনা অপসারণ না করায় শহরে দূষণ ক্রমেই বাড়ছে। ময়লার স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন  নগরবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীতে প্রতিদিন প্রায় আড়াই টন বর্জ্য অপসারণ করেন দেড় সহস্রাধীক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তারা রুটিন অনুযায়ী প্রতি রাতে বর্জ্য অপসারণের কাজে নিয়োজিত থাকেন। গত বুধবার রাত থেকে তারা দায়িত্ব পালন করছেন না। এমনকি তারা নগরীর সড়ক ঝাড়ু দেয়া বন্ধ রেখেছেন এবং বাসাবাড়ি থেকেও ময়লা নিচ্ছেন না।

নগরীর রুপাতলী শের-ই-বাংলা সড়কের বাসিন্দা জসিম খান জানান, ডাস্টবিনগুলোতে ময়লা জমে উপচে পড়ছে। নগরীর একাধিক সড়ক দখল করে আছে ময়লা আবর্জনা। ফলে যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।

এদিকে আজ নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেয় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় বিসিসির পরিচ্ছন্ন শাখার সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করীম ও শফিকুল আজম বলেন, বুধবার রাতে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পরিচ্ছন্ন কাজ চলার সময় তাদের ওপর হামলা ও গুলি করেছে উপজেলা পরিষদে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। ওই ঘটনায় মেয়র সাদিক আবদুল্লাকে প্রধান আসামি করে দায়ের হওয়া মামলায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন। যে কারণে তারা পরিচ্ছন্ন কাজ থেকে বিরত রয়েছেন। মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার না হলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না বলেও জানান তারা। মানববন্ধনে বিপুলসংখ্যক পরিচ্ছন্নতাকর্মী অংশ নেন।

এ প্রসঙ্গে বিসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন কথা বলতে না চাইলেও বিসিসি প্যানেল মেয়র-২ রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, সিটি মেয়রের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একাধিক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীর উপর হামলা হয়েছে। তাই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে অচিরেই নগরবাসীর এই সমস্যার সমাধান হবে। 

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে সাঁটানো অবৈধ ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে সিটি মেয়রসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর পুলিশ ও আনসারের রাতভর তিন দফা গুলি ও দফায় দফায় লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশ ও ইউএনও মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ৬০২ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে।