সারা বাংলা

কাউনিয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি ৫শ পরিবার

কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ী ঢলে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কোলঘেঁষা তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছে।

রোববার (২৯ আগস্ট) সকালে তিস্তার পানি প্রবল বেগে বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা তারিন নদীর পানি বৃদ্ধির কথা নিশ্চিত করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত বালাপাড়া ইউনিয়নের গোপিডাঙ্গা, চর ঢুষমারা, চর গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গা, পূর্ব নিজপাড়া, তালুক সাহবাজ, টেপামধুপুর ইউনিয়নের হরিচরণশর্মা, চর গনাই, চর আজমখাঁ, হয়বৎখাঁ, বিশ্বনাথ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৫শ পরিবার।

এরমধ্যে ঢুষমারার চরে পানি বন্দী হয়ে গেছেন প্রায় ৩শ’ পরিবার। গ্রামগুলোর মানুষ উচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা গবাদিপশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদী ভাঙনও দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া, আমন বীজতলা, আমন ধান ক্ষেত ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

ঢুষমারা চরের নজরুল ইসলাম জানান, সবাই তাদের নিয়ে ভোটের রাজনীতি করে কিন্তু তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা কেউ ভাবেন না। বন‌্যার সময় কেউ তিাদের খোঁজ রাখেন না।

কোব্বাত বলেন, ‘আমাদের চরের একমাত্র স্কুল মাঠে পানি, আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা নেই। পানিতে ডুবলে সামান্য ত্রাণ নিয়ে আসেন নেতারা। এরপর আর তাদের দেখা মেলেনা। নদী ভাঙন রোধে নেই কোনো কার্যকরী পদক্ষেপও নেন না তারা।’

কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন জানান, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ১০ হেক্টর আমন ধান ক্ষেত পুরো তলিয়ে গেছে এবং ১৫ হেক্টর অর্ধেক তলিয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবীব সরকার বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি আমরা খোঁজখবর রাখছি। আমাদের সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া আছে।’

ইউএনও তাহমিনা তারিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বন্যা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা ইউএনও’র দপ্তরে পাঠানো হবে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। তাই নতুন করে ভাঙন এলাকায় ভাঙন রোধে জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক বিষয়টি নিয়েও আন্তরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।