সারা বাংলা

গাইবান্ধায় ২১ গ্রাম প্লাবিত, হুমকির মুখে ৩ কোটি টাকার আশ্রয়ণ প্রকল্প

প্রবল বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডুবে গেছে রাস্তা ও ২টি ব্রিজসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের চারপাশ। এর ফলে হুমকির মুখে পড়েছে তিন কোটি টাকার ফুলছড়ি নীলকুঠি আশ্রয়ণ প্রকল্প। এছাড়া ভূমি ধসের আতঙ্কে ঘরও ছাড়ছেন অনেকেই।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়,যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাবেক ফুলছড়ি হেড কোয়ার্টার থেকে সামনে যমুনা নদীর দিকে তাকালেই চোখে পড়বে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। চারপাশে থৈ থৈ পানি। দুটি ব্রিজসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তা এখন পানির নিচে।

ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান শামসুল আলম সরকার জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ২ শতাধিক বাসিন্দা। তাদের যোগাযোগের জন্য নৌকা ছাড়া বিকল্প কোনো যান নাই। তাছাড়া, বালু দিয়ে তৈরি এই আশ্রয়ণ পানির শ্রোতে কখন ধসে যাবে সেই আতঙ্কে আছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মহসিন আলী বলেন, ‘আমরা খুব আতঙ্কে আছি। চারদিকে পানি আর পানি। ডুবে গেছে রাস্তা ও ব্রিজ। নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। যে কারণে আশ্রয়ণের লোকজনের যোগাযোগ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। কেউ কেউ আশ্রায়ণ প্রকল্প থেকে সরে অন্যত্র যাচ্ছেন।’ 

সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, চরাঞ্চলে পানিতে ডুবে গেছে অনেক ফসলের ক্ষেতসহ ঘরবাড়ি। পানি বৃদ্ধির কারণে সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দি,বাশহাটা, ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ,রতনপুরসহ অন্তত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ ,গাইবান্ধা সদর ,সাঘাটা ও ফুলছড়ির চরাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়িতে পানি উঠেছে। এসব গ্রামের রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এসব এলাকার যোগাযোগব‌্যবস্থা ভেঙে পরেছে। ফলে সেখানকার মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই।

ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে। ভূমিধস আতঙ্কে মানুষ সেখানে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। তাই শ্রোতের তীব্রতার ওপর নির্ভর করছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভবিষ্যত।

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রায়হান দোলন জানান,বর্ষা এলো ওই এলাকার চারপাশে পানি জমে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের চারপাশও ঢুবে যোগাযোগের রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তবে এতে ভয়ের কিছু নেই। মজবুত ও শক্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য চারপাশে জিও টেক্স দেওয়া হয়েছে।