মুন্সীগঞ্জে মেঘনা নদীর মাঝ থেকে ভাসমান অবস্থায় শাকিব (১২) ও মেহেদি হাসান (১৩) নামের দুই শিশুকে উদ্ধার করেছে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে টহলরত স্পিডবোট থেকে চিৎকার শুনতে তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত শিশুদের দাবি, পানি বিক্রির জন্য রাজধানীর সদরঘাট থেকে ‘ইমাম হাসান-৫’ নামের একটি লঞ্চে উঠেছিল তারা। ভাড়া না দেওয়ায় তাদের মেঘনা নদীতে ফেলে দেন লঞ্চের স্টাফরা।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশু দুটিকে ফেলে দেওয়া হয়নি। ট্রলারযোগে মুন্সীগঞ্জে নামতে না পেরে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল তারা।
এদিকে, শিশু দুটির সঙ্গে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিনের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
শনিবার রাত ১০টার দিকে গজারিয়া থানার ফেসবুক পেইজে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করছে ওই দুই শিশু।
এ বিষয়ে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘স্পিডবোটযোগে মেঘনা নদী দিয়ে গজারিয়া থেকে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম। পথে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে দুই শিশুকে নদীতে ভাসতে দেখে স্পিডবোট থামিয়ে নদী থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। পরে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নিয়ে শিশুদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে ঢাকা-সদরঘাটগামী ‘এমভি আল-বোরাক’ নামে আরেক লঞ্চে তাদের উঠিয়ে দেওয়া হয়।’
ওসি আরো বলেন, ‘শিশু দুটিকে উদ্ধারের পর তারা জানায়, সদরঘাট থেকে ইমাম হাসান-৫ লঞ্চে পানি বিক্রির জন্য ওঠে তারা। কিন্তু ভাড়া না দেওয়ায় ওই লঞ্চের স্টাফরা তাদের মাঝ নদীতে ফেলে দেয়।’
তবে লঞ্চ থেকে ফেলে দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা দাবি করেছেন ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের মাস্টার দোলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘পানি ও রুটি বিক্রি করা বাচ্চাদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয় না। ওরা টোকাই, ওদের কাছ থেকে ভাড়া চাওয়াই হয়নি। ভাড়ার জন্য নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনাটি সত্য না। হয়তো মুন্সীগঞ্জে নদীতে ট্রলারে যাত্রী নামানোর সময় ওরা নামতে পারেনি। তাই নিজেরাই নদীতে লাফ দিয়েছিল। পরে যাত্রীরা আমাদের জানায় লঞ্চের পেছন থেকে দুটা বাচ্চা পানিতে লাফ দিয়েছে।’
দেলোয়ার হোসেন বলেন, রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে তাদের আবার সদরঘাট টার্মিনালে দেখলাম শুয়ে আছে। তাদের আমি চিনি, আমাকে নানা নানা বলে ডাকে তারা। তারা সদরঘাটের টার্মিনালেই থাকে। ’