সারা বাংলা

চাঁদা না পেয়ে নারীর যৌন হেনস্থার ভিডিও ফেসবুকে

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার প্রবাসী দুই সন্তানের কাছে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে তাদের মাকে যৌন হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে দৃর্বুত্তরা। অবশ্য ওই চার দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন হেনস্তার শিকার পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী ওই নারী। পুলিশ তাদের শনাক্ত করেছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। 

গত ২৩ আগস্ট মধ্যরাতে উপজেলার আগতালুক গ্রামে নিজগৃহে হেনস্তার শিকার হন ওই নারী। ৬ মিনিট ১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ওই নারীকে যুবকের হাতে ধরে কাকুতি-মিনতি করতে দেখা গেছে। কোনো কথাবার্তা না শোনা গেলেও ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা গেছে ভিডিওতে। ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে মধ্যরাতে।

ভিডিওতে দেখা যায়, জানালার লোহার গ্রিলের বাহিরে থেকে ভিডিও করা হয়েছে। এতে ভেতরে থাকা একজন ওই নারীর শাড়ির আঁচল ধরে টেনে খুলে ফেলেছেন। ওই নারী হাতজোড় করে কয়েকবার কাকুতি-মিনতি করছেন। বাহিরে থাকা ব্যক্তিদেরও হাত ধরেছেন তিনি। ভিডিওতে হেনস্তার বিষয়টিই স্পষ্ঠভাবে ফুটে উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট জেলা পুলিশের কানাইঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনাটি গত ২৩ আগস্ট ঘটলেও তার এলাকার পঞ্চায়েত নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে সালিশে সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা পুলিশের নজরে আসে। রাতে ওই নারীকে থানায় নিয়ে এসে মামলা করানো হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, মামলায় যে চারজনকে আসামি করা হয়েছে, তারা ওই নারীর স্বজন। মূলত ব্লাকমেইল করতেই হেনস্তার ভিডিও ধারণ করেন তারা। এ চারজনকে পুলিশ শনাক্ত করেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।   ওই নারীর স্বজনরা জানান, পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই নারীর দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন। আর দুই কন্যার বিয়ে হয়ে গেছে। এ কারণে তিনি একাই বাড়িতে বসবাস করেন। ঘটনার পরদিন তিনি কাউকে না জানিয়ে তার বাবার বাড়িতে চলে যান। তখন হঠাৎ করে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মুখ খোলেন তিনি।

এরপর আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকা দুই ছেলের কাছে মায়ের হেনস্তার ভিডিও পাঠিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে ভিডিও ধারণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু টাকা দিয়ে ভিডিও উদ্ধারের চেষ্টা করে সন্তানরা।

এ নিয়ে গত বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সালিশে চার লাখ টাকার বিনিময়ে ভিডিওর বিষয়টি সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য অগ্রিম ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আর বাকি টাকা শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দেওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু টাকা না পেয়ে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় দৃর্বুত্তরা।

পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদ জানান, পুলিশ শালিসে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা অভিযুক্ত চারজনকে থানায় সোপর্দ করবেন বলে জানান। তবে তারা এখনও পলাতক। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি।