সারা বাংলা

গোমস্তাপুরে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ওষুধ সংকটসহ নানা কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

উপজেলার অনেক এলাকার স্থানীয় জনগণ অভিযোগ করেছেন, খুব অল্প সময়ের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো খোলা হয়। এবং তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবার যেটুকু সময় খুলছে তাও সেবাদানকারী কর্মীরা বিশেষ করে নারী কর্মীরা ক্লিনিকে তেমন থাকেন না।

জ্বর, মাথা ব্যাথা, ডায়রিয়াসহ বিনামূল্যে ৩১টি রোগের ওষুধ সরবরাহ করার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে দুই একটি রোগের ওষুধ।  আর তালিকায় দেখা গেছে ২৭টি রোগের ওষুধ।  এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসার জন্য রোগীদের যেতে হচ্ছে অন্য ক্লিনিক বা হাসপাতালে । ফলে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা গুণতে হচ্ছে রোগীদের।

চিকিৎসা নিতে আসা তানজিলা অভিযোগ করে বলেন, ‘জ্বর, মাথা ব্যাথা নিয়ে ক্লিনিকে ওষুধের জন্য এসেছি কিন্তু তারা বলছে এখানে ওষুধ নাই। তাই আমাকে এখন বাইরে থেকে ওষুধ নিতে হবে’।

উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের হুক্কাপুর এলাকার রহীমা বেগমসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের স্বরস্বতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটি অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। ফলে বাচ্চাদের সর্দি-কাশিসহ নানা রোগ ও নারীদের নানা সমস্যা সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা নিয়ে আমরা চিন্তিত। এই ক্লিনিকটি বর্তমানে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এরপর বন্ধ হয়ে যায়।

এলাকাবাসীর বার বার এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১১টায় রহনপুর ইউনিয়নের স্বরস্বর্তীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে ক্লিনিকটি খোলা পাওয়া যায় । এ বিষয়ে এক নারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মূলত ক্লিনিকটি বেশীরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। এজন্য অনেক রোগী এসে প্রতিদিন ফিরে যান। তাছাড়া রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার করেন না। এমন অভিযোগে নয়াদিয়াড়ী ও বোয়ালিয়া কমিনিউটি ক্লিনিকেও সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। 

এ বিষয়ে জানতে স্বরস্বতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সাজেদা বেগম  বলেন, নিয়মিত ক্লিনিকে আসা হয়।  কিন্তু এই ক্লিনিকটির বিল্ডিং খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। আর আমার একটি ছোট বাচ্চা আছে । তাই ১২টার পরে চলে যাই। আর দুপুরের পর ক্লিনিকে রোগীর চাপ কম থাকে, তাই বন্ধ রাখা হয়।  ওষুধ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে ২৭ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা  হয়।  এবং রোগীর চাপ বেশি থাকায় মাসের প্রথম দিকে ওষুধ শেষ হয়ে যায়। পরে আর ওষুধ দেওয়া যায় না।

এ বিষয়ে রহনপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. সাওন আলী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। শুনেছি অনেক ক্লিনিক বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের নজরদারি আরো বাড়ানো দরকার বলে আমি মনে করছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মাসুদ পারভেজ জানান, আমাদের কাছে ওষুধ আসে তিন মাসে একবার। কিন্তু এতে যা ওষুধ আসে তা এক থেকে দেড় মাসেই শেষ হয়ে যায়। এজন্য আমরা সব সময় ওষুধ দিতে পারি না।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।