সারা বাংলা

বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ৪ জনের মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিদ্যুতায়ন বোর্ড নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা।

জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কাশেম সরদারকে প্রধান এবং উপ-পরিচালক আবদুল আলিমকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একসঙ্গে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটি সরাতে কর্মকর্তাদের অনুরোধ করলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা‌ বলেন, প্রায় ৩৫ বছর আগে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এখানে খুঁটি স্থাপন করে সংযোগ দেয়। ১০ বছর আগে এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহের এখতিয়ার চলে যায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে। তারা ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরাতে উদ্যোগ নেয়নি। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেননি।

নিহত আব্দুর রহিমের শ্যালক মোরশেদ আলম বলেন, ‘অনেকবার তাদের খুঁটি সরাতে বলেছি। তারা সরাইনি। তাদের কাছে মানুষের জীবনের মূল্য নেই।’

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা বলেন, দুই মাস আগে ওই খুঁটি সরাতে গেলে আব্দুর রহিম বাধা দেন। এজন্য খুঁটি সরানো হয়নি। দ্রুতই ঝুঁকিপূর্ণ সব খুঁটি সরিয়ে ফেলা হবে।

সোনাইমুড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে মৃতদের তালিকা পাঠিয়েছি। সেখান থেকে তাদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের শীলমুদ গ্রামে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে চারজনের মৃত্যু হয়।

মৃতরা হলেন- উপজেলার বজরা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের শীলমুদ গ্রামের শহীদ মাওলানা বাড়ির আবুল বাশারের ছেলে আব্দুর রহিম (৫৫), উজির আলীল ছেলে ইউসুফ (৪৮), নূর হোসেনের ছেলে মো. সুমন (২৮) ও মো. শহীদ উল্লাহর ছেলে মো. জুয়েল (১৬)।

বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মীরন অর রশীদ বলেন, শীলমুদ গ্রামের শহীদ মাওলানার বাড়ির পাশের জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুতের মেইন লাইনের তার ছিঁড়ে পড়ে ছিল। আব্দুর রহিম পানিতে নামলে প্রথমে তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়েন। পরে বাকি তিনজন তাকে বাঁচাতে গেলে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।