সারা বাংলা

ডিসির বাংলো ঘিরে পাখপাখালির মেলা

পানকৌড়ি ও সাদা-খয়েরি বকসহ নানা প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে মুখর চাঁদপুরের ডিসির বাংলো। চারদিকের উঁচু উঁচু আম, নারকেল আর মেহগনি গাছগুলো যেন এসব পাখিদের পরম আশ্রয়।  

স্থানীয়রা বলছেন, বাংলোকে ঘিরে পাখিদের এই অবস্থান নাকি শতবছরের।  বাংলোর পাশের চাঁদপুর সদর হাসপাতালের রোগীদেরও সকালের ঘুম ভাঙে পাখিদের কিচির মিচির ডাকে। সারা বছরই এখানে বক, পানকৌড়ি, কাক, ঘুঘু, শালিকসহ নানা পাখির বিচরণ দেখতে পাওয়া যায়।

তাই এদের বংশ বিস্তার টিকিয়ে রাখতে গাছগুলো যাতে কখনো না কাটা হয় এমন দাবী জানিয়েছেন অনেকে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর)  স্থানীয় রাকিব, মুরাদ, স্বপন, রকিসহ অন্যান্যরা জানান, আগে এখানে অনেক বক ও পান কৌড়ি পাখি ছিলো। কিন্তু মাঝখান দিয়ে গাছপালা কেটে ফেলায় অনেক পাখি কমে গেছে। তাই গাছপালা যাতে আর না কাটে এবং এখানে এই পাখিগুলো দেখতে যাতে পথচারীদের বসার ব্যবস্থা এবং আরো কিছু গাছ লাগানো হয়।

দেখা যায়, বক পানকৌড়ির দল ঝাঁক বেঁধে নিকটস্থ ডাকাতিয়া নদী ও এর চরে ঘুরে বেড়ায়। এরপর খাবার খেয়ে আবার ফিরে আসে এখানে গাছের উঁচু ডালের আপন নিবাসে ।

পাখিরা গাছের ডালে বসে এখানে বিষ্ঠা ছড়াচ্ছে।।এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে কিনা তা জানতে চান বেড়াতে আসা দিলরাজ, মারুফসহ কয়েকজন। 

এ ব্যপারে চাঁদপুর সদরের প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মুকবুল হোসেন বলেন, এসব পাখি পরিবেশ বান্ধব। এরা পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এদের বিষ্ঠায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি একেবাড়েই কম। তাই এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

প্রকৃতিপ্রেমী ও পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার বলেন, ডিসির বাংলোকে ঘিরে পাখপাখালির মিলনমেলা আমি দারুণভাবে উপভোগ করি। পাখিরা প্রকৃতির অংশ। ওরা প্রকৃতিগতভাবেই ডিসির বাংলোর গাছগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। তাই এদেরকে রক্ষা এবং সুন্দর আবাসস্থল গড়ে দিতে সকলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে ডিসির বাংলোতে আবাসস্থল গড়ে তোলা এই পাখিদের নিজের পরিবারের সদস্য মনে করেন চাঁদপুরের ডিসি অন্জনা খান মজলিশ। 

তিনি বলেন, আমি এবং আমার পরিবার এই পাখিগুলো এবং তাদের কিঁচিরমিচির শব্দ খুব উপভোগ করি। ওরা তো আমার পরিবারের সদস্য। আমিও চাই ওরা নিরাপদে ওখানে সংখ্যায় আরো বেড়ে উঠুক। তাই আমি আমার সকল স্টাফদের নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি পাখিগুলোকে যাতে কেউ ডিস্টার্ব না করে। দ্রুত সেখানে ওদের জন্য আরো কিছু গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিবো।