সারা বাংলা

একমাসেও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্রী, পাচারের শঙ্কা পরিবারের

একমাসেও উদ্ধার হয়নি বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার চুনখোলা বাজার থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রী সাদিয়া খানম (১৪)। 

কোথায় আছে কেমন আছে, তাও জানা নেই পরিবারের। দিন যত গড়াচ্ছে পরিবারের উদ্বেগ-উৎকন্ঠাও তত বাড়ছে। পরিবারের শঙ্কা, অপহরণকারীরা দেশের বাইরে পাচার করে দিয়েছে মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে। দ্রুত এই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী ও স্বজন। 

এদিকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণের মূলহোতাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির এই অপহৃত শিক্ষার্থী মোল্লাহাট উপজেলার শাসন গ্রামের আরিফুল আলম মুন্সির মেয়ে। 

তার বাবা জানান, ২৬ আগস্ট প্রতিদিনের মতো বাড়ির কাছের চুনখোলা বাজারে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে আর ফিরে আসেনি তার মেয়ে। পরে জানতে পারেন পার্শ্ববর্তী চুনখোলা গ্রামের শাকিল চৌধুরী সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে তার মেয়েকে অপহরণ করেছে। মেয়েকে ফিরে পেতে ১ সেপ্টেম্বর শাকিল চৌধুরী, আরিফ চৌধুরীসহ তিনজনকে আসামি করে মোল্লাহাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, তারপর থেকে এখন পর্যন্ত জানতে পারলাম না আমার মেয়ে কোথায় আছে। মেয়ের চিন্তায় আমার স্ত্রীও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে। 

স্কুলছাত্রীর মা শিরিন খাতুন জানান, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে চুনখোলা গ্রামের শাকিলসহ তিনজন বখাটে ছেলে বিভিন্ন সময় তার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। এমনকি অপহরণের হুমকিও দিয়েছিল তারা। বিষয়টি বখাটেদের পরিবারকে জানানো হয়। পরবর্তীতে গ্রামবাসীর মধ্যস্থতায় ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যায় ওই বখাটেরা। ওই বখাটেরাই আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। 

তিনি বলেন, ওরা আমার মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছে, নয়তো পাচার করে দিয়েছে। তা না হলে যেকোন ভাবে মেয়ে আমাকে ফোন করতো। ১৪-১৫ বছর বয়সে সে কখনও আমাকে ছাড়া থাকেনি। আমি আমার মেয়েকে ফিরে চাই, বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় এই মা। 

মোল্লা মোতালেফ হোসেন, শিকদার মাহমুদুল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওয়াব আলী শিকদারসহ স্থানীয়রা বলেন, দিনে দুপুরে একটা মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেলো, আর আমরা কিছু করতে পারলাম না। এটা খুবই দুঃখজনক। পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি যত দ্রুত সম্ভব এই মেয়েকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, অপহরণ মামলার তিন আসামির মধ্যে আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ভিকটিমকে উদ্ধার ও প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।