সারা বাংলা

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে তারাগঞ্জের কয়েক হাজার মানুষ

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের ভীমপুর শাইলবাড়ী ঘাট দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে চিকলি নদী।  কিন্তু নদীতে কোনো সেতু না থাকায় নিত্য প্রয়োজনে ওই ইউনিয়নের ১২ গ্রামের প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। 

নদীর উপড়ে সেতু না থাকায় গত বছর ওই গ্রামগুলোর স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা তুলে চিকলী নদীর উপড়ে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করেন।  কিন্তু এ বছর বর্ষায় সাঁকোটির মধ্যাংশ ভেঙ্গে গেছে।  ফলে কৃষিপণ্য নিয়ে হাটে যাওয়া কৃষকদের দুর্ভোগ আরো চরমে উঠেছে।

জানাযায়, ২০১৬ সালের বন্যায় চাকলী নদীর উপর থাকা বাশের সাঁকোটি ভেঙে যায়।সর্বশেষ ২০২০ সালের বন্যায় আবারও সেটি ভেঙে গেলে স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্দ্যোগে ও অর্থায়নে আবারো সাঁকোটি নির্মাণ করেন। এই সাঁকোটি ব্যবহার করে ১২ গ্রামের হাজারও মানুষ ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করেন।  

ভীমপুর শাইলবাড়ী ঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মিন্টু মিয়া, নুরুজ্জামান, আব্দুল জব্বার, নুর ইসলাম, আমিনুর রহমান জানান, সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় আমরা আমাদের উৎপাদিত পণ্য চিকলির হাট, তেঁতুলতলা বাজার, ভীমপুর বাজার ও তারাগঞ্জ বাজারে নিয়ে যেতে পারছিনা। এর ফলে গ্রামেই কমদামে আমাদের কৃষিপণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। 

তারা আরো জানান, আমাদের উপজেলা সদরের তারাগঞ্জ বাজারে সোমবার ও শুক্রবার হাট বসে।  এ হাটে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য কেনাবেঁচা হয়।  এখানে পণ্য বিক্রি করতে পারলে মোটামুটি বেশি টাকা পাওয়া যায়।

সাঁকোটি না থাকায় এখন দীর্ঘপথ অতিক্রম করে হাটে যেতে হয়।  এতে অতিরিক্ত টাকা বেশি ভাড়া গুণতে হয় আমাদের। এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আজমল হোসেন,আমীর উদ্দিন,আমজাদ হোসেনসহ আরও অনেকের সাথে কথা হয়।  তারা জানান, প্রতি বছর গ্রামের মানুষগুলোর বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো বানাই।  কিন্তু যখন বর্ষা শুরু হয় নদীত পানি বেশি হয় তখন বাঁশের খুঁটিগুলা পানির  স্রোতে ভেঙে যায়।  এতে করে আমাদের চলাচল বন্ধ হয়া যায়।  তখন আমাদের কষ্টের শেষ থাকেনা।  সরকার এখানো একটা সেতু বানিয়ে দিলে হাজার হাজার মানুষের কষ্ট দূর হবে।

চকতাহীরা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র আব্দুল ওয়াজেদ সরকার বলেন, আমাদের এলাকার হাজারও শিক্ষার্থী প্রতিদিন তারাগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে  লেখাপড়ার জন্য যায়।  কিন্তু ব্রিজ না থাকায় এসব স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়।  তাই এখানে সেতু হলে আমাদের অনেক কষ্ট লাঘব হত।

বাঁশের সাঁকোটি ভেঙ্গে পড়ার কারণে আলমপুর ইউনিয়নের ভীমপুর,প্রামানিকপাড়া,মৌলভীপাড়া, বানিয়াপাড়া, খ্যানপাড়া, শাইলবাড়ি, ডাঙ্গাপাড়া, নলুয়ারডাঙ্গা, কোরানীপাড়া, মহেশখোলা, দর্জিপাড়া, ডাঙ্গাপাড়াসহ মোট ১২ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার এলাকার শাইলবাড়ি ঘাটে সেতু নির্মাণের বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানিয়েছি।  ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ না থাকার কারণে আমি সাঁকোটি সংস্কার করতে পারছি না।   

এলজিইডির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ হায়দার জামান বলেন, শাইলবাড়ি ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য গত বছর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমরা ঢাকায় পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই সেখানে দ্রুত নির্মাণ করা হবে সেতু।