সারা বাংলা

নিঁচু করে সেতু নির্মাণের অভিযোগ, উঁচু করার দাবি

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর শাকরাইল খেয়া ঘাটে নির্মাণাধীন সেতুটি নিঁচু করে নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।

নিঁচু করে নির্মাণ করার ফলে বর্ষা মৌসুমে এ নদী দিয়ে সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ থাকছে। এতে করে সাধারণ মানুষ নৌযানে করে মালামাল পরিবহন করতে না পারায় বিকল্প পথে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ভোগান্তি লাঘবে নির্মাণাধীন সেতুটি উঁচু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় জানায়, ৬০ মিটার দৈর্ঘ‌্যের ও রেলিংসহ ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের এ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সেতুর সঙ্গে ৭০ মিটারের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য ৫ দশমিক ৫ মিটার জায়গা থাকবে। মেসার্স সেলিম সুরমা নামের টিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করছে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে কাজ শুরু হলেও করোনা ও বন্যার কারণে কাজ সমাপ্তির তারিখ বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বনাথপুর গ্রামের তাহাজ উদ্দিন বলেন, ‘এক সময় এ ধলেশ্বরী নদীই ছিলো এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের একমাত্র নৌপথ। কালের বিবর্তনে ধলেশ্বরী নদীতে বর্ষায় পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায়। তবে সম্প্রতি নদী খননের ফলে ধলেশ্বরী চেনা রুপে ফিরতে শুরু করেছে। ফলে এলাকার মানুষ তাদের মালামাল সহজে নৌপথে পরিবহনের সুযোগ পেয়েছে। তবে শাকরাইল সেতুটি নিঁচু হওয়ায় বর্ষায় নৌপথ বন্ধ থাকছে। ফলে সাধারণ মানুষকে মালমাল পরিবহনে বিকল্প নৌপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে।’

তিল্লী এলাকার লোকমান মিয়া বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে ধান ও পাটের ব্যবসা করি। আশেপাশের এলাকার বাড়িগুলোতে স্যালু নিয়ে গিয়ে ধান ও পাট সংগ্রহ করি। পরে সপ্তাহে এক বা দুইদিন নাগরপুর বা নবাবগঞ্জের দিকে গিয়ে হাটগুলোতে এসব ধান ও পাট বিক্রি করি। তবে এবার ধলেশ্বরী নদীর শাকরাইলে নির্মাণার্ধীন সেতুটি নিঁচু হওয়ায় ওইদিকের বাড়িগুলো থেকে ধান,পাট কিনতে পারিনি। ফলে অনেক ক্রয়চুক্তিও বাতিল করতে হয়েছে।’

মো. জহির হোসেন বলেন, ‘সেতুর নকশা করার সময় কি পরিমাণ পানি হয় সেগুলো খেয়াল করলে এ সমস্যা হওয়ার কথা না। আর বন্যার বিষয়টা খোঁজখবর নিয়ে নকশা করলে আরও ভালো হতো। সেতুটি নির্মাণ হলে  দুইপাড়ে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হবে। তবে এভাবে সেতু নির্মাণ হলে বর্ষায় নৌপথে ব্যবসা বাণিজ্য করা লোকজনের ক্ষতি হবে।’

ওই এলাকার মো. রুবেল হোসেন জানান, গত বছরের বন্যায়ও নৌপথ বন্ধ ছিলো। পরে এলাকাবাসীর দাবিতে সংশ্লিষ্টরা নকশা পরিবর্তন করে সেতুটি দুই ফুট উঁচু করেছে। দুই ফুটের জায়গায় আরও একটু উঁচু করলে ভালো হতো। এভাবে সেতু নির্মাণ হলে বর্ষা বা সামান্য বন্যাতে নৌপথে নৌযান চলতে পারবে না।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ( এলজিইডি) মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছর ওই সেতুটি পরিদর্শন করে দুই ফুট উঁচু করে নতুন নকশা প্রণয়নের কাজ করেছি। সকল ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেতুর নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্ষায় এ সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারবে।’