মাদারীপুরের কালকিনীতে হাত বোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণে ইয়ামিন বেপারী (৪৫) ও সুমন সিকদার (৩০) নামে দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মন্নান মোল্লা নামে এক ইউপি সদস্যের বসতঘরে রাতের আধারে হাতবোমা বানানোর সময় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে বসত ঘরটির টিনের চালা উড়ে গেছে।
আহত দুইজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টার দিকে সিডিখান ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সকালে পুলিশ ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করেছে। এ সময় বিপুল পরিমাণ হাত বোমা উদ্ধার করেন তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৯ নভেম্বর মাদারীপুরের ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনে কালকিনি উপজেলার সিডিখান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান চানঁমিয়া শিকদার ও চেয়ারম্যন পদপ্রার্থী মিলন পেদারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে অনেকদিন ধরেই বিবাদ রয়েছে।
এই বিবাদের জের ধরেই ইউনিয়নটিতে বার বার বোমা বিস্ফরনের ঘটনা ঘটছে। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় হত্যাকাণ্ডেরও ঘটনা ঘটেছিল।
চানঁমিয়া শিকদার ও মিলন পেদসহ তিনজন সিডিখান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। ইতিমধ্যে তারা কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরমও কিনেছেন।
কালকিনি থানার ওসি ইসতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, সিডিখান ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মন্নান মোল্লার বসতঘরে হঠাৎ করেই বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে করে ওই ঘরটির টিনের চালা ও টিনের বেরা উড়ে যায়। এ সময় দুইজন গুরুতর আহত হন।
মিলন পেদার দাবী বোমা বানানোর সময়ই বোমা বিস্ফরণের ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও সিডিখান ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৫ দফায় বোমা বিস্ফরণের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত দুই মাসে সিডিখান এলাকার সুজন পেদার ঘরে, মিলন মিয়ার পুকুর পাড়ে এবং জাহাঙ্গীর সরদারের রান্না ঘরের পাশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে গত দুই মাসে পাঁচবার এই এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
তবে বোমা বিস্ফোরণের কারণ জানতে বিবাদমান দুই নেতার কোনো পক্ষেরই বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে জরিতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বার বার বোমা বিস্ফোরণের কারন উদঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ।’
ওসি ইসতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ‘ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। আমরা কারন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তবে ধারনা করা হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই বার বার এমন ঘটনা ঘটছে।’